কলকাতা: ১২ এপ্রিল, ১৯১২। আটলান্টিক মহাসাগরের অতলে তলিয়ে গিয়েছিল ‘টাইটানিক’। তারপর কেটে গিয়েছে ১১১ বছর কিন্তু এই জাহাজ নিয়ে কৌতূহল মানুষের কাছে কমেনি এতটুকু। তাই তো এই সময়ে দাঁড়িয়ে ‘টাইটানিক ট্যুর’ হয়। আটলান্টিকের প্রায় ১৩ হাজার ফুট গভীরে গিয়ে মানুষ এই জাহাজের ধ্বংসাবশেষ চাক্ষুষ করতে পারে। তবে সম্প্রতি যে দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে তার পর সমুদ্র তলদেশেই এই অঞ্চল নিয়ে অনেক বেশি আলোচনা হচ্ছে। সকলের জানার ইচ্ছে যে, টাইটানিকের ‘পাড়ায়’ ঠিক কী কী বিপদ লুকিয়ে আছে।
টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে সাবমারসিবেল টাইটান ধ্বংস হয়েছে। ভিতরে থাকা ৫ যাত্রী মুহূর্তের মধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই দুর্ঘটনার মূল কারণ ‘ক্যাটাস্ট্রফিক ইমপ্লোশন’ হতে পারে অর্থাৎ সমুদ্রের নীচে জলের প্রচণ্ড চাপ সহ্য করতে না পেরেই ওই সাবমারসিবেল ‘চুপসে’ যায়। কয়েক মিলিসেকেন্ডের মধ্যে টাইটান দুমড়ে গিয়েছিল বলেই অনুমান। তাহলে শুধুই কি এই জলের চাপ ভয়ের কারণ? নাকি অন্য অনেক কিছু ভয়ানক হতে পারে আটলান্টিকের গভীরে, টাইটানিকের আশেপাশে? সেই বিষয় নিয়ে এখন বহু চর্চা চলছে।
টাইটানিকের কাহিনী সিনেমার পর্দায় ভীষণ দক্ষতার সঙ্গে ফুটিয়ে তুলেছিলেন পরিচালক জেমস ক্যামেরন। বিশ্বাস না হলেও এটা সত্যি যে তিনি ওই সিনেমা বানানোর সময়কালে অন্তত ৩৩ বার নিজে টাইটানিক পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন। সেই অভিজ্ঞতা বিশ্বের সঙ্গে ভাগ করে নিয়ে তিনি জানান, সমুদ্রের ওই গভীরে তারা একবার বালিঝড়ের সম্মুখীন হয়েছিলেন! অন্যদিকে সমুদ্রতলের চিকিৎসক জো ম্যাককিনিস ১৭টি অভিযানে সামিল হয়েছিলেন টাইটানিকের। তিনি নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে জানান, সমুদ্রের তলার তারের জটে তাদের সাবমেরিন আটকে গিয়েছিল।
টাইটানিক দর্শনের আরও ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন সাংবাদিক মাইকেল গুইলেন। তিনিই প্রথম সাংবাদিক যিনি আটলান্টিকের ওই গভীরে যান। তিনি জানান, জাহাজের সামনের ভাঙা অংশটি অতিক্রম করার পরেই তাদের সাবমেরিনটির গতি বেড়ে গিয়েছিল আচমকা। পরে জানা যায়, সেটি চোরাস্রোত। এমনকি তাদের যানটি টাইটানিকের প্রপেলারেও ধাক্কা খেয়েছিল। এখন টাইটানের সঙ্গে আদতে ঠিক কী ঘটেছে তা জানার অপেক্ষায় গোটা বিশ্ব।