ফ্লোরিডা: সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলের নোনা বা লবণাক্ত জলের উদ্ভিদ ম্যানগ্রোভ৷ ফ্লোরিডা সহ অন্যান্য উষ্ণ জলবায়ু অঞ্চলের উপকূলবর্তী এলাকার বাস্তুতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই ম্যানগ্রোভ আজ সংকটের মুখে৷ গ্রিন হাউড গ্যাসের নির্গমন হ্রাস না পেলে ২০৫০ সালের মধ্যে বেড়ে চলা সমুদ্র স্তরে হারিয়ে যাবে ম্যানগ্রোভ অরণ্য৷ সম্প্রতি সাইন্স জার্নালে উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য৷
উপকূলবর্তী এই অরণ্য ভূমিক্ষয় রোধে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে৷ এছাড়াও বিপুল পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে ম্যানগ্রোভ৷ সেইসঙ্গে মাছ ও অন্যান্য প্রজাতির প্রাণির বাসস্থানও বটে৷ গত ১০ বছরের পলি স্তরের তথ্যের ভিত্তিতে অস্ট্রেলিয়ার ম্যাককুয়েরি বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বাধীন একটি আন্তর্জাতিক দল বলছে, সমুদ্রের স্তর বৃদ্ধির উপর ম্যানগ্রোভের বেঁচে থাকার বিষয়টি নির্ভর করেছে৷
এর আগেও লড়াই করেছে ম্যানগ্রোভ৷ বছরে ৬ মিলিমিটার পর্যন্ত বেড়েছে সমুদ্রের স্তর৷ পলি স্তরের তথ্যের ভিত্তিতে গবেষকরা জলস্তরের এই ওঠানামায় ম্যানগ্রোভ বাস্তুতন্ত্র কী ভাবে সাড়া দিয়েছিল তা আবিষ্কার করতে পেরেছেন৷ তাঁরা জানাচ্ছেন, ১০ হাজার বছর আগে সমুদ্রের স্তর প্রতি বছর ১০ মিলিমিটার হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল৷ তবে ৪ হাজার বছর আগে তা স্থিতিশীল অবস্থায় পৌঁছয়৷ ম্যানগ্রোভ অরণ্যের সম্প্রসারণের ফলে বিপুল পরিমাণ কার্বন তারা সঞ্চয় করেছে৷ যার ফলে কমেছে গ্রিন হাউস গ্যাসের মাত্রাও৷
তবে গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সমুদ্রের জলস্তর প্রতি বছর ৬ মিলিমিটারের বেশি বৃদ্ধি পেলে ম্যানগ্রোভগুলি এই বর্ধিত জল স্তরের সঙ্গে সামঞ্জস্য বাজায় রাখতে পারবে না৷ ২০৫০ সালের মধ্যেই তা ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাবে৷ সমুদ্র স্তরের বৃদ্ধি প্রতি বছর ৫ মিলিমিটারের মধ্যে বেঁধে ফেলা গেলে বাঁচানো যাবে ম্যানগ্রোভ অরণ্যকে৷ আর এটা সম্ভব হবে একামাত্র গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমন কম হলে৷ তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে বহু উপকূলবর্তী এলাকাতেই জলস্তর প্রতি বছর ৭ মিলিমিটারের বেশি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ এই পরিস্থিতিতে ম্যানগ্রোভের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা মাত্র ৩.৫ শতাংশ বলেই জানাচ্ছেন গবেষকরা৷