লন্ডন: পৃথিবীর চৌম্বকীয় ক্ষেত্রে ঘটছে বদল৷ লিডস এবং ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সমীক্ষায় উঠে এল এমনই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য৷ আগেকার যাবতীয় গবেষণার ধারণা ভেঙে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পৃথিবীর চৌম্বকীয় ক্ষেত্রটি পূর্বের চিন্তাভাবনার চেয়েও দশগুণ দ্রুত গতিতে গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে৷
পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র হল এক ধরনের চৌম্বকীয় স্তর যা পৃথিবীর অভ্যন্তরভাগ থেকে শুরু করে মহাশূন্য পর্যন্ত বিস্তৃত। যেখানে ক্ষেত্রটি সূর্য থেকে উৎপন্ন সৌর বায়ুর সাথে মিলিত হয়। ভূপৃষ্ঠে এর আয়তন ২৫ থেকে ৬৫ মাইক্রোটেসলা। পৃথিবীর ঘূর্ণন অক্ষের তুলনায় ১১ ডিগ্রি হেলানো অবস্থায় রয়েছে এই চৌম্বক মেরু ক্ষেত্র।
ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ২,৮০০ কিলোমিটার গভীরে লোহার ঘূর্ণি প্রবাহ এবং গত একশ হাজার বছর ধরে কী ভাবে তা চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের গতিবিধিকে প্রভাবিত করছে সে সম্পর্কে এক নতুন ধারণা উঠে এসেছে এই সমীক্ষায়৷ পৃথিবীর চৌম্বকীয় ক্ষেত্রটি গলিত ধাতুর একটি উত্তেজক প্রবাহ দ্বারা নির্মিত হয়েছে৷ তরল লোহার গতি বৈদ্যুৎপ্রবাহ তৈরি করেছে৷ যা শুধু নেভিগেশনাল সিস্টেমকে গাইড করতে সাহায্য করে না, ক্ষতিকারক অতিরিক্ত স্থলীয় বিকিরণ থেকে আমাদের রক্ষা করতে এবং আমাদের বায়ুমণ্ডলকে স্থানে ধরে রাখতে সহায়তা করে। এই চৌম্বকীয় ক্ষেত্রটি প্রতিনিয়তই পরিবর্তিত হচ্ছে৷
চৌম্বকীয় ক্ষেত্র প্রসঙ্গে ব্রিটেনের লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ক্রিস ডেভিস বলেন, “বিগত ৪০০ বছর ধরে পৃথিবীর চৌম্বকীয় ক্ষেত্র সম্পর্কে আমাদের হাতে পর্যাপ্ত তথ্য আসেনি। এই সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান সম্পন্ন নয়৷ বর্তমানে পৃথিবীর চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের এই দ্রুত পরিবর্তন সম্পর্কে যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তা আমাদের অনেকটাই সমৃদ্ধ করবে। এর থেকে ভবিষ্যতে পৃথিবীর অভ্যন্তরের গলিত ধাতব অংশের আচরণ সম্পর্কেও অনেক নতুন তথ্য জানা যাবে।”