কম্বোডিয়া: অবশেষে অবসর নিচ্ছে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত ‘মাগাওয়া’। কম্বোডিয়ায় স্থলমাইন ও অবিস্ফোরিত বোমা শনাক্ত করে স্বর্ণপদক জিতেছিল সে। না কোনও মানুষ নন, এটি একটি ইঁদুরের কাজ। মানুষের যেমন বয়সের ধর্ম মেনে একটা সময় নিজেদের কাজ থেকে অব্যাহতি নিতে হয়, তেমনই ইঁদুরটিকেও নির্দিষ্ট সময় মেনে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে৷ পাশাপাশি মাইন শনাক্ত করার কাজে নিযুক্ত করা হচ্ছে অপেক্ষাকৃত কম বয়সি ইঁদুর।
বিবিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৫ বছর ধরে এই বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন ইঁদুরটি ৭১টি স্থলমাইন ও কয়েক ডজন অবিস্ফোরিত বোমা উদ্ধার করেছে। আর এই কৃতিত্বের স্বীকৃতি হিসেবে যুক্তরাজ্যের পশু চিকিৎসা বিষয়ক দাতব্য সংস্থা পিডিএসএ গত সেপ্টেম্বরে ওই ইঁদুরটিকে পুরষ্কারস্বরূপ স্বর্ণপদক প্রদান করে। মাগাওয়ার স্বর্ণপদক পাওয়ার অনুষ্ঠানটি পিডিএসের ওয়েবসাইটে সম্প্রচারিত হয়েছিল। নিজেদের দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করার জন্য এর আগেও অনেক প্রাণী স্বর্ণপদক পেলেও, ৭৭ বছরের ইতিহাসে ইঁদুরদের মধ্যে মাগাওয়াই প্রথম এই পুরষ্কার ভূষিত হয়েছে।
বিভিন্ন জায়গায় বিস্ফোরক দ্রব্য শনাক্ত করে মাগাওয়া অসংখ্য মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে। অগুণতি মানুষের জীবনে তার কাজের কীর্তি রেখে অবসর নিচ্ছে এবার সাত বছর বয়সি আফ্রিকান এই প্রাণীটি৷ বিবিসির তরফে জানা গিয়েছে, এই ইঁদুরটি জন্মেছে আফ্রিকার তাঞ্জানিয়ায়। ১৯৯০ সাল থেকে তাঞ্জানিয়ায় একটি দাতব্য সংস্থা অ্যাপোপো তাকে প্রশিক্ষণ দেয়। ম্যালেন নামে এক ব্যক্তি এই ইঁদুরটির প্রশিক্ষক। এদিন ইঁদুরটির অবসর প্রসঙ্গে তার প্রশিক্ষক বলেন যে, সাত বছর বয়সি আফ্রিকার খুদে এই দৈত্য ইঁদুরের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার কাজের গতি মন্থর হয়ে পড়েছিল এবং তিনি তাকে তার প্রয়োজনীয় সম্মান দিতে চান। মাগাওয়ার ওজন ১.২ কেজি। এর দৈর্ঘ্য ৭০ সেন্টিমিটার (২৮ ইঞ্চি)। যদিও মাগাওয়া অন্য অনেক ইঁদুরের প্রজাতির তুলনায় আকারে অনেক বড়। এমনকি স্থলমাইন খোঁজার জন্য একেবারে উপযুক্ত আকৃতির। এই ইঁদুরকে ‘হিরো র্যানটস’ও বলা হয়। মাগাওয়া মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে টেনিস কোর্টের আকারের ক্ষেত্রে অনুসন্ধান করতে পারত। অ্যাপোপোর কথায়, ধাতব ডিটেক্টরের সাহায্যে এই কাজ একজন ব্যক্তির করতে প্রায় চার থেকে পাঁচদিন সময় লেগে যাবে।