করাচি: আতঙ্কের সঙ্গে দিন কাটাচ্ছেন পাকিস্তানের হাসনাবাদ গ্রামের বাসিন্দারা৷ জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে বিশ্বের অনেক হিমবাহ গলতে শুরু করেছে৷ তার মধ্যে উত্তর পাকিস্তানের কারাকোরাম পর্বতের হিমবাহ অন্যতম৷ আর এই পর্বতের পাদদেশেই রয়েছে হাসনাবাদ গ্রাম৷ গ্রামটির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া একটি নদীতে কালো বরফের খন্ডাংশ দেখতে পাওয়া গিয়েছে৷ এখানে প্রতিদিন প্রায় চার মিটার করে বরফ গলতে শুরু করেছে৷ হিমবাহ গলনের পরিমাণ প্রায় ১০ গুন বেড়ে গিয়েছে৷ যার ফলে অত্যন্ত ঝুঁকিতে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা৷
গ্রামের বাসিন্দা বসির আলি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, গ্রামের প্রতিটি বাসিন্দা, নাগরিক ও পশু-পাখি অত্যন্ত বিপদের মধ্যে বাস করছেন৷ হিমবাহের ফলে বার বার এই উপত্যকা অঞ্চলে হড়পা বান দেখা দিয়েছে৷ গ্রামগুলো বন্যায় তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ অন্য দিকে, বিশেষজ্ঞদের তরফে জানানো হয়েছে, যখন একটা বরফের হ্রদের বিস্ফোরণ হবে, তখন সেখান থেকে শুধু বরফ পাওয়া যাবে না, সেখানে প্রচুর কাদাও রয়েছে৷ হ্রদ বিস্ফোরণ হলে, একটা ভয়াবহ স্রোতের সৃষ্টি করবে, তাদের গতিপথে যা আসবে, তা ধ্বংস করে দেবে৷ পাকিস্তানের শিসপার হিমবাহ ইতিমধ্যে গলতে শুরু করেছে৷
এই হিমবাহের বরফগুলো অনেক ক্ষেত্রে সিন্ধু নদীতে মিশতে শুরু করেছে৷ এরফলে শুধু হাসনাবাদ গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হবে না৷ পাকিস্তানের বিস্তীর্ণ চাষের জমিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞ মহলের৷ যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সমগ্র পাকিস্তান৷ এমনিতেই সিন্ধু নদীর জলের বন্টন নিয়ে পাকিস্তানেরল সঙ্গে ভারতের একটা চাপা উত্তেজনা রয়েছে৷
কারাকোরাম পর্বতমালা বিশ্বের অন্যতম সুউচ্চ পর্বতমালা হিসেবে বিবেচিত হয়৷ কিন্তু কারাকোরাম পর্বতমালার হিমবাহ দ্রুত গলতে শুরু করেছে৷ অনুমান করা হচ্ছে, যে হারে হিমবাহ গলতে শুরু করেছে, ২১০০ সালের মধ্যে কারাকোরাম পর্বতমালার সমস্ত হিমবাহ গলে যাবে৷ পাকিস্তানের চাষের অঞ্চলগুলোর ৯০ শতাংশ সিন্ধু নদীর তীরে গড়ে উঠেছে বলে রাষ্ট্রসংঘের ওপর নির্ভর করছে৷ এছাড়া এই সিন্ধু নদীর ওপর ভারতও অনেকাংশে নির্ভর৷ কিন্তু সিন্ধু নদীর তীরে বন্যা দেখা দিলে, দুই দেশে আকাল দেখা যাবে৷ ২০২৫ সালের মধ্যে পাকিস্তানে জলের আকাল দেখতে পাওয়া যাবে৷ এরপরেই হিমবাহ গলনের ফলে পাকিস্তানের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে বন্যা দেখতে পাওয়া যাবে৷