কাঠমান্ডু: পর্বতের শৃঙ্গ জয়টা একেবারে নেশার মতো৷ সেই নেশার টানেই আবারও এভারেস্ট জয় করে ফিরলেন একজন শেরপা কামি রিতা৷ যিনি এক-আধবার নয়, এই নিয়ে ২৫ বার এভারেস্ট জয় করে ফিরে এলেন৷ এই খবরে সিলমোহর দিয়েছেন ডিপার্টমেন্ট অফ ট্যুরিজমের মুখপাত্র মীরা আচার্য।
গত শুক্রবার কামি রিতা এগারো জন শেরপার সঙ্গে ছ’টা নাগাদ এভারেস্ট শৃঙ্গ জয় করেন। এই বছরে কামির দলই প্রথমবার শৃঙ্গ জয় করল। বছরের শেষের দিকে অন্য অভিযাত্রীরা যদি আসেন, সেই কথা ভেবে বরফ ঢাকা পথে দড়ি লাগিয়ে এসেছেন তাঁরা। যাতে অন্য অভিযাত্রীদের পথ চিনে নিতে অসুবিধা না হয়। সাধারণত প্রতি বছর অভিযাত্রীরা নেপাল ও চিন, এই দুই দেশের অন্তর্গত অংশ দিয়ে পাহাড়ে চড়া শুরু করেন। এভারেস্টের উত্তর অংশ পড়ে চিনের দিকে আর দক্ষিণ অংশ পড়ে নেপালের দিকে। কিন্তু গত বছর করোনা ভাইরাস সংক্রমণের জেরে দু’ দিক দিয়েই এভারেস্টে পর্বতারোহণ বন্ধ ছিল। তবে করোনা বর্তমানে আবারও ঝোড়ো ইনিংস খেলছে। করোনা আবহেই দিন কয়েক আগেই নেপালের দিক থেকে এভারেস্ট যাওয়ার রাস্তা খুলে দেওয়া হয়েছে। করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট দেখিয়ে চিনের দিক থেকে হাতে গোনা কয়েকজনকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মে মাসে এই অঞ্চলের খামখেয়ালি আবহাওয়া কিছুটা ভালো থাকে, তাই এই সময়েই পর্বতারোহীরা এভারেস্টের টানে ছোটেন।
একান্ন বছরের কামি রিতা ১৯৯৪ সালে প্রথমবার এভারেস্ট জয় করেন। এর পর থেকে নেশার মতো প্রায় প্রতি বছরই তিনি এভারেস্ট জয় করে ফিরে আসেন। এভারেস্ট জয় করতে আসা অন্যান্য অভিযাত্রীদের সুরক্ষিত রেখে তাঁদের পথ দেখিয়ে এভারেস্টে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বও পালন করেন অনায়াসে। কামির বাবাও একজন সুদক্ষ শেরপা ছিলেন। এভারেস্ট ছাড়াও তিনি জয় করেছেন মানসলু, লোৎসে ইত্যাদি শৃঙ্গ। ২০১৫ সালে একবার তুষার ঝড়ের কবলে পড়েছিলেন কামি। সেই দুর্ঘটনায় তিনি বেঁচে গেলেও, প্রাণ যায় ১৯ জন সহ অভিযাত্রীর। তার পর থেকেই কামির বাড়ি থেকে প্রবল চাপ দেওয়া হয় যে এবার পাহাড়ে চড়া বন্ধ করতে হবে। প্রথমে রাজি হলেও পরে বেঁকে বসেন এভারেস্ট জয়ী এই শেরপা।