সাম্প্রতিককালে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে বিভিন্ন ধরনের GIF তথা এমন কিছু মানুষের অদ্ভুত এবং হাস্যকর হাবভাব যা একদিকে মজার আবার অন্যদিকে অনন্যও বটে। তেমনই একটি জনপ্রিয় GIF হল নীল রঙের জামা পরা বছর পাঁচেকের একটি বাচ্চা মেয়ের হাসি। অপ্রত্যাশিত কোনও আনন্দ পাওয়ার পরে আমরা যেরকম দন্তবিকশিত হয়ে হাসি, GIF-এর ওই বাচ্চা মেয়েটির হাসিও অনেকটা সেই রকম। তবে সোশ্যাল মিডিয়াতে যার GIF তথা প্রাণখোলা হাসি এত ভাইরাল আসল দুনিয়ায় এই বাচ্চা মেয়েটির দুঃখে রীতিমতো চোখের জল ফেলছেন নেটপাড়ার লোকজন। জানা যাচ্ছে, GIF-এ ভাইরাল হওয়া এই বাচ্চা মেয়েটির নাম কাইলিয়া পোসি। যার হাসি সোশ্যাল মিডিয়ায় অল্পসময়ের মধ্যেই এত ভাইরাল হয়েছে সেই ছোট্ট কাইলিয়াই মাত্র ১৬ বছর বয়সে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে খবর। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে বুধবার কানাডিয়ান সীমান্ত থেকে কয়েক মাইল দূরে ওয়াশিংটন রাজ্যের বার্জ বে স্টেট পার্কে কাইলিয়ার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান আত্মহত্যা করেছেন ১৬ বছর বয়সী ওই কিশোরী।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়াতে কাইলিয়ার মা মার্সি পোসে গ্যাটারম্যানও কাইলিয়ার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন। নিজের ছোট্ট মেয়ের মৃত্যু প্রসঙ্গে এদিন তাঁর মা সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘আমার আর কোন কিছু চিন্তা করার বা কথা বলার শক্তি নেই। আমার ফুলের মত সুন্দর ছোট শিশুকন্যাটি চলে গেছে আমাকে ছেড়ে। অনুগ্রহ করে কয়েকদিন আমাকে এবং আমার পরিবারকে একটু একা থাকতে দিন। আমরা সবকিছু থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে কাইলিয়ার চলে যাওয়ার এই শোক কাটিয়ে উঠতে চাই।’ স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বুধবার রাতে ওয়াশিংটনের ওই পার্ক থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে কাইলিয়ার মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। তবে ঠিক কি কারণে ওই কিশোরী এমন চূড়ান্ত পথ বেছে নিয়েছেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। অন্যদিকে কাইলিয়ার পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়াও পড়াশোনাতেও অত্যন্ত দক্ষ এবং মেধাবী একজন কিশোরী ছিল কাইলিয়া এবং তাঁর ভবিষ্যৎও যথেষ্ট উজ্জ্বল ছিল। কিন্তু তারপরেও কাইলিয়া কেন এত তাড়াতাড়ি জীবন শেষ করার সিদ্ধান্ত নিল সেটা তার পরিবারের কাছেও অজানা।
উল্লেখ্য 2012 সালে বাচ্চাদের একটি প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় কাইলিয়া পোসি। বাচ্চাদের এই শোয়ে যোগদান করার অল্প দিনের মধ্যেই জনপ্রিয়তা পেয়েছিল এই কিশোরী। ওই শোয়েই কাইলিয়ার অদ্ভুত একটি হাসি মুখের ভিডিও মিম হিসাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ওই মিম বিশ্বজুড়ে স্বীকৃতি পায়। ফলে মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই বিশ্বজুড়ে খ্যাতি লাভ করে ছোট্ট কাইলিয়া।
তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখের অঙ্গভঙ্গির জন্য ভাইরাল হলেও আসলে কিন্তু কাইলিয়ার স্বপ্ন ছিল একজন বিমানচালক হওয়া। জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই কাইলিয়া হাইস্কুলে পড়াকালীনই কমার্শিয়াল পাইলট হওয়ার জন্য কলেজে ভর্তি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু তার মধ্যেই হঠাৎ করে এমন কি ঘটেছে যার জন্য তাঁকে নিজের জীবন এইভাবে শেষ করতে হল তা এখনও স্পষ্ট নয়। অন্যদিকে কাইলিয়ার এমন অপ্রত্যাশিত মৃত্যুতে কার্যত শোকোস্তব্ধ নেটপাড়া। তার এইভাবে চলে যাওয়া যেন মানতেই পারছেন না তার অনলাইন অনুরাগীরা।