লন্ডন: একাধারে তিনি মিস ইংল্যান্ড৷ অন্যদিকে মনে প্রাণে বাঙালি৷ গত বছর ইংলন্ডের সেরা সুন্দরীর শিরোপা উঠেছিল তাঁর মাথায়৷ বিউটি কুইনের সেই ক্রাউন ছেড়েই এবার স্টেথোস্কোপ হাতে করোনা বিরোধী যুদ্ধে সামিল হতে চললেন বঙ্গ তনয়া ভাষা মুখোপাধ্যায়৷
ভাষার বয়স ২৪৷ মেডিক্যালের দুটি পৃথক ডিগ্রি রয়েছে তাঁর ঝুলিতে৷ এই বছর মার্চের শুরুতে একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানের আমন্ত্রণে চার সপ্তাহের জন্য ভারতে এসেছিলেন তিনি৷ বিভিন্ন স্কুলে পড়ুয়াদের সচেতন করে তুলতে ও প্রতিবন্ধীদের সাহায্যে কাজ করছিলেন ভাষা৷ অনাথ শিশুকন্যাদের শেল্টারের ব্যবস্থা করতেও তিনি টাকা দেন৷ ভাষার জন্ম ভারতেই৷ তাঁর পরিবার যখন ব্রিটেনে যায়, তখন তিনি ৯ বছরের বালিকা৷
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে মিস ইংল্যান্ড প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য চিকিৎসার পেশা থেকে সাময়িক বিরতি নিয়েছিলেন এই বঙ্গতনয়া৷ প্রতিযোগিতায় সেরার পালক ওঠে তাঁর মুকুটে৷ এর পরই মডেলিং-এ যোগ দেন তিনি৷ তবে করোনা সংক্রমণের জেরে সারা বিশ্বে যে সংকট দেখা দিয়েছে, তা দেখার পর পুরনো পেশায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ভাষা৷ তিনি জানান, ইংল্যান্ডের পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে৷ বোস্টনের পিলগ্রিম হাসপাতাল থেকে সেই পরিস্থিতির কথা মেসেজ করে জানিয়েছেন তাঁর প্রাক্তন সহকর্মীরা৷ এর পরই ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি৷
ভাষা বলেন, “আমি ঘরে ফিরতে চাই৷ ফিরেই কাজে যোগ দিতে চাই৷ এই সময় যদি দেশের সেবা করতে না পারি, তাহলে চিকিৎসকের ডিগ্রি আর কবে কাজে লাগবে?’’ সংবাদসংস্থা সিএনএন-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভাষা বলেন, “মিস ইংল্যান্ড শিরোপা নিয়ে এই সময় আমার ইংল্যান্ডের পাশে থাকাই সবচেয়ে জরুরি। একজন ডাক্তার হিসেবে আমার এখন পিলগ্রিম হাসপাতালে কাজ করা উচিত। আমি আমার সহকর্মীদের কাছ থেকে ওই অঞ্চলের খবর নিয়মিত শুনছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমি কাজে যোগ দিতে চাই।”
লকডাউনের জেরে ভারতে আটকে পড়েছিলেন ভাষা। ভারত থেকে ফ্র্যাঙ্কফোর্টের ফ্লাইটের জন্য কলকাতায় ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি৷ গত বুধবার ইংলন্ডে পৌঁছন ভাষা৷ তবে এখনই কাজে যোগ দিতে পারবেন না এই বিউটি কুইন৷ নিয়ম মেনে দুই সপ্তাহ গৃহবন্দি থাকতে হবে তাঁকেও৷