নিউ ইয়র্ক: আফ্রিকান-আমেরিকান জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু ঘিরে ধুন্ধুমার অব্যাহত মার্কিন মুলকে৷ বিক্ষোভ-প্রতিবাদে কেঁপে উঠেছে হোয়াইট হাউস৷ এরই মধ্যে সোমবার ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা গেল, ক্রমাগত হাঁটু দিয়ে ঘাড়ে চাপ দেওয়ার ফলে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের। এই ঘটনাকে নরহত্যা বলেই উল্লেখ করা হয়েছে৷
জানা গিয়েছে, প্রায় আট মিনিটের উপর এক ভাবে হাঁটুর চাপে শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয় ফ্লয়েডের। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের বলা হয়েছে, ঘাড়ের উপর ক্রমাগত হাঁটুর চাপ পড়ায়, মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শ্বাস নেওয়াও জর্জের পক্ষে কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। ফলে মৃত্যু হয় তাঁর৷ এই ঘটনায় পরিবারের তরফে আলাদা করে ময়নাতদন্ত করানো হয়েছিল। সরকারি ময়নাতদন্তের রিপোর্টের সঙ্গে এই রিপোর্টের কিছুটা অমিল রয়েছে।
স্বতন্ত্রভাবে ময়নাতদন্ত করা দুই চিকিৎসক এবং ফ্লয়েডের পরিবারের দুই আইনজীবী বলেন, জর্জের কোনও অসুখ ছিল না৷ যার কারণে তাঁর মৃত্যু হতে পারে৷ তাঁদের দাবি, শুধুমাত্র হাঁটু দিয়ে ফ্লয়েডের ঘাড়ে চাপ দেওয়া হয়নি, বাকি দুই পুলিশ অফিসার সর্বশক্তি দিয়ে তাঁর শরীরের চেপে ধরেছিল৷ যে ওজন নিতে পারেননি ফ্লয়েড৷ তাঁরা জানিয়েছে, ফ্লয়েডের অ্যালকোহল বা ড্রাগ নেওয়ার কোনও প্রমাণ পাননি তাঁরা৷ মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ফরেন্সিক ডাক্তারের মধ্যে ডা. এ্যালেসিয়া উইলসন জানান, কৌশলে দমবন্ধ করে হত্যা করা হয়েছে ফ্লয়েডকে৷
শেতাঙ্গ পুলিশ অফিসার ডেরেক শভিনের হাঁটুর চাপেই মৃত্যু হয় ৪৬ বছরের জর্জ ফ্লয়েডের৷ আর্তনাদের পরেও ফ্লয়েডের ঘাড় থেকে পা সরাননি তিনি৷ এই ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে থার্ড ডিগ্রি মার্ডার ছাড়াও নরহত্যার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷ বাকি তিন পুলিশ অফিসারকেও বরখাস্ত করা হয়েছে৷ তবে ওই তিন পুলিশ অফিসারকেও গ্রেফতার করার দাবি জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জর্জের পরিবারের আইনজীবী৷ গত সোমবার মিনিয়াপেলিসে পুলিশি অত্যাচারের শিকার হন কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড৷ এই অত্যাচারের ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই আমেরিকায় বিক্ষোভের আগুন জ্বলে ওঠে৷