বস্টন: অতীতকে চাক্ষুষ করতে গিয়ে এখন তারা নিজেরাই অতীত হয়ে গিয়েছেন। টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে আটলান্টিকের প্রায় ১৩ হাজার গভীরে যাওয়া সাবমারসিবেল টাইটান ধ্বংস হয়েছে। ভিতরে থাকা ৫ যাত্রীও আর নেই। কেমন করে এই মারাত্মক ঘটনা ঘটল তা নিয়ে এখনও চর্চা চলছে। অনেকেই অনেক কিছু ‘থিওরি’ দিয়েছেন বটে তবে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, টাইটানের ধ্বংস হয়ে যাওয়া টুকরো হাতে না পাওয়া পর্যন্ত ১০০ শতাংশ নিশ্চিত হওয়া যাবে না যে কী ভাবে এই ঘটনা ঘটেছে। তবে অধিকাংশ বিশেষজ্ঞরা যে বিষয়টিকে গ্রহণযোগ্য মনে করছেন তা হল ‘ইমপ্লোশন’।
টাইটানের ধ্বংসাবশেষ মিলেছে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ থেকে ১৬০০ ফুট দূরে। তবে ধ্বংসাবশেষ কোথায় আছে জানা গেলেও তার কাছাকাছি পৌঁছনো যায়নি। তবে উপকূলরক্ষী বাহিনী থেকে শুরু করে ডুবোযান তৈরির সংস্থা, সব পক্ষই নিশ্চিত করে জানিয়েছে, টাইটানে থাকা কোনও যাত্রী আর বেঁচে নেই। দুর্ঘটনা কী ভাবে ঘটেছে তা অনুমান করতে গিয়ে বলা হচ্ছে, মহাসাগরের গভীরে নামার কিছু সময়ের মধ্যেই ‘ক্যাটাসট্রোফিক ইমপ্লোশন’ ঘটেছিল। কিন্তু ঠিক কী এই ঘটনা? কী ভাবে ঘটে? যাত্রীদের শেষ মুহূর্তই বা কেমন ছিল? এই সব প্রশ্ন উঠে আসছে এখন।
বিষয় হল, বিস্ফোরণকে বলা হয় এক্সপ্লোশন, আর এই ইমপ্লোশন হল ঠিক তার বিপরীত ঘটনা। অর্থাৎ, এক্সপ্লোশন হলে বস্তু ফেটে ছড়িয়ে পড়ে। আর ইমপ্লোশন হলে কোনও বস্তু আচমকা ফেটে না গিয়ে ভিতরের দিকে চুপসে যায়। সমুদ্রের গভীরে থাকা সাবমেরিন বা সাবমারসিবেলের ক্ষেত্রে এই ঘটনা খুবই স্বাভাবিক। সমুদ্রের গভীরের জলের প্রচণ্ড চাপ এই ঘটনা ঘটায়। ডুবোজাহাজের ভিতরে থাকা বায়ুর চাপের চেয়েও বাইরের জলের চাপ যখন বেশি হয়ে যায় তখনই এই ধরনের ঘটনা ঘটে। যানের ধাতব দেওয়াল দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে বলে সন্দেহ।
তাহলে যাত্রীরা কিছু কি টের পেয়েছিলেন মৃত্যুর আগে? মনে করা হচ্ছে, টাইটানের ভিতরে থাকা যাত্রীরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই সব শেষ হয়েছে। কারণ এই ইমপ্লোশন হতে কয়েক মিলি সেকেন্ড লাগে। এর অর্থ, আপনি কোনও আঘাতে প্রতিক্রিয়া দেওয়ার সময়টুকুও পাবেন না। ওই ৫ যাত্রীর ক্ষেত্রেও তাই হয়ে থাকতে পারে। টাইটানের ভিতরেই তারা কয়েক সেকেন্ডে পিষে গিয়েছেন। অনুমান, টাইটানের ধাতব কাঠামো ত্রুটিপূর্ণ ছিল। সেটি জলের চাপ সহ্য করতে পারেনি।