দিন কয়েক আগেই দেশ জুড়ে সারম্বরে পালিত হয়েছে রাম নবমী অর্থাৎ শ্রী রাম জন্ম তিথি। রামায়ণে চৈত্রমাসের শুক্লপক্ষের নবমী তিথি যেমন রাম জন্মতিথি হিসাবে প্রসিদ্ধ তেমনই চৈত্র পূর্ণিমার দিনটিকে রামায়ণে শ্রী হনুমান জন্ম জয়ন্তী হিসাবে বর্ণনা করা আছে। হিন্দু পুরাণ অনুসারে সাতজন মহামানবের এখনো পর্যন্ত মৃত্যু হয়নি। তাদের মধ্যে রামায়ণে হনুমান জি-র মৃত্যুর কথা কোথাও উল্লেখ করা হয়নি।
মহর্ষি বাল্মীকি রচিত রামায়ণের মূল খন্ডে কথিত আছে সীতাকে উদ্ধার করার পর শ্রী রামচন্দ্রের পরম মিত্র ও ভক্ত হনুমান জি-কে রামচন্দ্র খুশি হয়ে অমরত্ব প্রাপ্তির বরদান দেন। সেই অমরত্বের জোরে হনুমান জি নাকি এখনো আসেন ভক্তদের মাঝে! পুরাণ অনুসারে ভক্তরা এখনো বিশ্বাস করেন হনুমান জি জীবিত আছেন। তিনি হিমালয়ের কোন একটি গভীর জঙ্গলে শ্রী রামের তপস্যায় রত আছেন। অনেকে হনুমান জি-কে লোকারণ্যের মাঝে হঠাৎ প্রকট হতে দেখেছেন বলেও দাবি করেন।
পুরাণ কিন্তু সম্পূর্ণ অন্য কথা বলছে। হনুমান জি তার ভক্তদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, যে ভক্ত আমার নাম এমন স্থানে গিয়ে জপ করবে যেই স্থান থেকে হাজার কিলোমিটারের মধ্যে কোন মনুষ্যের বাস থাকবে না। সেতু নামে একটি আধ্যাত্মিক সংস্থা গবেষণা চালিয়ে কলম্বোর জঙ্গলে এমন এক আদিবাসী উপজাতির খোঁজ দেয় যাদের কাছে হনুমান জি নাকি এখনো আসেন।
ওই গবেষণা সংস্থার দাবি, মাতঙ্গ নামে ওই আদিবাসী উপজাতির মানুষেরা দাবি করেন, প্রতি ৪১ বছর অন্তর হনুমান জি তাদের কাছে আসেন ব্রহ্মজ্ঞান দিতে। রামায়ণে কথিত আছে শ্রী রামচন্দ্রের দেহত্যাগের পর হনুমান জি শ্রীলঙ্কার জঙ্গলে চলে আসেন। সেখানে মাতঙ্গ উপজাতির সঙ্গে তিনি ব্রহ্মজ্ঞান প্রদান করতেন।
মাতঙ্গরা তাঁর সেবা করায় হনুমান জি প্রীত হয়ে প্রতি ৪১ বছর তাদের কাছে ফিরে আসার কথা দিয়ে হিমালয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। মাতঙ্গদের গোষ্ঠিপ্রধান প্রতি ৪১ বছর অন্তর হনুমান জি-র অভ্যর্থনা করেন এবং একটি পুস্তকে তাঁর কথিত শিক্ষাকে লিপিবদ্ধ করে রাখেন।
এই পুস্তককে হনুপুস্তিকা বলা হয়। মাতঙ্গদের ভাষা সভ্যসমাজের মানুষের ভাষার থেকে আলাদা। এই পুস্তকটি এখনও পাঠ করা সম্ভব হয়নি। হনুমান জি সত্যিই তাদের কাছে আসেন কিনা তারও বৈজ্ঞানিক কোন প্রমান পাওয়া যায়নি। মাতঙ্গদের বিশ্বাসেই বেঁচে আছেন হনুমান জি।