হামাস কারা? ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন যুদ্ধের উত্তাপ নতুন নয়

হামাস কারা? ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন যুদ্ধের উত্তাপ নতুন নয়

f4e72bbd58f9cc55ee1ce45d59689bc4

নয়াদিল্লি: বিগত কয়েক দিন ধরেই করোনাভাইরাস সংক্রমণের খবরের পাশাপাশি আরও একটি খবর সকলেই পাচ্ছেন, যেটি শুনে স্বাভাবিকভাবেই বিশ্ববাসী আরো বেশি তাজ্জব হয়ে গেছে। কথা হচ্ছে ইজরায়েল এবং প্যালেস্টাইনকে নিয়ে। বিগত কিছুদিন ধরেই এই দুটি দেশ একে অপরকে আক্রমণ করেছে এবং ইতিমধ্যেই প্রচুর মানুষের মৃত্যু হয়েছে দুই দেশের। প্যালেস্টাইনকে এয়ারস্ট্রাইক অ্যাটাক করেছে ইজরায়েল এবং অন্যদিকে হামাস বাহিনী রকেট ছুড়ে কার্যত যুদ্ধের সলতেতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই দুই দেশের যুদ্ধের ভবিষ্যৎ কী। তবে তার আগে আরো একটা প্রশ্নের উত্তর খোঁজা দরকার যে এই দুই দেশে যুদ্ধের আবহ তৈরি হয়েছে কেন।

যদি কেউ মনে করে থাকেন যে ইজরায়েল এবং প্যালেস্টাইনের এই যুদ্ধের পরিবেশ নতুন তাহলে তিনি ভুল করবেন। এই দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের আবহ বিগত ৭৩ বছর ধরে বর্তমান। এবার আরো একবার হঠাৎ দুই দেশের মধ্যে পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে গিয়েছে জেরুজালেমকে কেন্দ্র করে। কয়েকদিন আগে জুম্মার নামাজের জন্য জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে জনসমাগম হয় এবং সেখানে প্যালেস্টাইন এবং ইজরায়লি পুলিশের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ বাঁধে। এই সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতেই ফের একবার যুদ্ধের আবহ তৈরি হয়েছে দুই দেশের মধ্যে কারণ, প্যালেস্টাইনের হামাস বাহিনী ইসরায়লকে কার্যত হুমকি দেয় সেখান থেকে বাহিনী সরানোর জন্য। প্যালেস্টাইনের হামাস বাহিনীকে ইজরায়ল সহ বিশ্বের একাংশ জঙ্গিগোষ্ঠী বলে মনে করে। এবং ইসরাইলের সঙ্গে তাদের সংঘাত এই জেরুজালেম ও গাজা ভূখণ্ডকে নিয়ে। দুজনেই মনে করে যে জেরুজালেম সহ গাজা ভূখণ্ড এবং ওয়েস্ট ব্যাংক তাদের জমি। প্যালেস্টাইন দাবী করে যে এই জমি ইজরায়েল দখল করে রেখেছে, অন্যদিকে ইজরায়েল দাবি করে যে এই ভূখণ্ড তাদের। এই পরিস্থিতিতে হামাস বাহিনীর আক্রমণ আরো বেশি করে আন্তর্জাতিক মহলের চিন্তা বাড়িয়েছে।

4a4a442c89d330210db01852bfb6acfc

হামাস, বা হরকাত আল-মুকাওয়ামা আল-ইসলামিয়া (ইসলামিক প্রতিরোধ আন্দোলন), একটি জঙ্গি গোষ্ঠী যার প্রতিষ্ঠাতা আশখেলনের শেখ আহমেদ ইসমাইল হাসান ইয়াসিন। ১৯৮৭ সালের হামাস গঠিত হয় যেটি প্যালেস্টাইনের কট্টর ইসলামপন্থী সংগঠন গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়। ওয়েস্ট ব্যাংক এবং গাজা থেকে ইজরায়েলের দখলদারির অবসান ঘটাতে এই গোষ্ঠীর আবির্ভাব। হামাসের মূল শত্রু ইজয়ায়েল। এই গোষ্ঠীর মূলত দুটি উদ্দেশ্য। একটি হলো ইজরায়েলের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া। অন্যদিকে প্যালেস্টাইনে একাধিক স্বাধীন কর্মসূচি পরিচালনা করা। আসলে প্যালেস্টাইনের দুটি দল বেশ সক্রিয় ছিল। এদের মধ্যে একটি হামাস এবং অন্যটি ফাতাহ। ২০০৪ সালে হামাস এবং পাতার মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয় এবং পরবর্তী ক্ষেত্রে গাজা দখল করে হামাস। এখন সেখানে সরকার চালায় তারাই। সেই সময় থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্যালেস্টাইনকে সাহায্য করা বন্ধ করে দেয়। যদিও তার আগে থেকেই প্যালেস্তিনীয় দের মধ্যে হামাস ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে যায় তাদের প্রতিশ্রুতি এবং রাজনৈতিক অভিসন্ধির পরিপ্রেক্ষিতে। শাসন শুরু করার পর থেকেই হামাস দাবি করতে থাকে যে, প্যালেস্টাইনের সমস্যা জিহাদ ছাড়া সমাধান হওয়া সম্ভব নয়।

3e4fd72b57807f8c542370a3bbb28b30

ইতিমধ্যে ইজরায়েল এবং প্যালেস্টাইনের মধ্যে যে যুদ্ধ হচ্ছে তাতে নিহত হয়েছে ১৬ শিশুসহ ৫ জন মহিলা। অন্যদিকে ইজরায়েলের সেনাবাহিনীর অনেকের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানায় যাচ্ছে। এই কদিনে কমপক্ষে ৬৩০ টির বেশি মিসাইল ছুড়েছে হামাস। কিন্তু ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা এতটাই উন্নত মানের যে আকাশ এই সেই সমস্ত মিসাইল রোধ করতে পেরেছে তারা। ১৫০ টি হামাস মিসাইল লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে বলে খবর। অন্যদিকে জানা গিয়েছে, ইজরায়েলের পাল্টা হামলা ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ১০ হামাস জঙ্গির। দুই পক্ষের এখনো পর্যন্ত ৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে সূত্রের খবর।  ইতিমধ্যে বিশ্বের একাধিক দেশের শীর্ষ নেতৃত্ব দুই দেশকে শান্তির বার্তা দিয়েছে এবং মধ্যস্থতা করতে চেয়ে অনুরোধ জানিয়েছে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *