ওয়াশিংটন: নভেল করোনা ভাইরাসে স্পেন ও ইতালি এক প্রকার মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে৷ প্রতিদিন যেন মৃত্যুর হার বেড়েই চলেছে৷ তবে আশার আলো দেখাচ্ছে সম্প্রতি একটি পরিসংখ্যান৷ দেখা গিয়েছে, ইতালি ও স্পেনে মৃতের সংখ্যা কমেছে৷ ফ্রান্স ও ইরানেও মৃতের হার ধীরে ধীরে কমতে দেখা গিয়েছে৷ ব্রিটেনে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যার পাশাপাশি মৃত্যুর হারও কমতে দেখা গিয়েছে৷ যার ফলে আশার আলো দেখছে বিশ্ব৷ ঘটনায় ফের প্রমাণিত হচ্ছে, করোনা প্রতিরোধ করতে একটাই উপায় আছে বিশ্ববাসীর কাছে লকডাউন৷ তবে ইতালি ও স্পেনের তরফে জানানো হয়েছে, মৃত্যুর হার কমতে শুরু করলেও এখনও পরিস্থিতি ভয়াবহ৷
ইতালি ও স্পেনে মৃতের হার কমে আসার নেপথ্যে লকডাউন রয়েছে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞরা৷ ইতালির জনস্বাস্থ্য বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, লকডাউনের জেরেই এই মৃত্যুর হার কমেছে৷ ইতালিতে রবিবার ৫২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ এই হার গত দুই সপ্তাহে ইতালিতে সর্বনিম্ন৷ ১৯ মার্চ ৪৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়৷ মৃতের সংখ্যায় এখনও শীর্ষে রয়েছে ইতালি; দেশটিতে মোট ১৫ হাজার ৮৮৭ জনের মৃত্যু ঘটেছে। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৮ হাজার ৯০০ জন, যা বিশ্বে তৃতীয়। আক্রান্তের সংখ্যায় ইতালিকে ছাড়িয়ে যাওয়া স্পেনে টানা তৃতীয় দিনের মতো মৃতের সংখ্যা আগের চেয়ে কমেছে। রোববার স্পেনে ৬৭৪ জনের মৃত্যুর খবর দিয়ে সিএনএন বলেছে, গত ২৬ মার্চের পর এটাই দেশটিতে মৃত্যু বৃদ্ধির সর্বনিম্ন হার।
রবিবার স্পেনে আড়াই হাজার আক্রান্ত হয়েছেন করোনা ভাইরাসে৷ জানা গিয়েছে, স্পেনে নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের হার কমছে৷ ২০ মার্চের পর নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা এটাই সর্বনিম্ন৷ স্পেনে ৩৪ হাজারের বেশি মানুষ সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে জানা গিয়েছে৷ রবিবার ব্রিটেনে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধিও আগের দিনের চেয়ে কমেছে। দেশটির রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ এদিন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ব্রিটিশেদের সাহস জুগিয়ে বলেছেন, সুদিন আবার ফিরবে।
ব্রিটেনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার ৪০৬ জন, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ হাজার ছুঁইছুঁই করছে। ব্রিটেনের বিশেষজ্ঞরা অবশ্য আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, দেশে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা আসতে আরও সাত থেকে ১০ দিন বাকি রয়েছে, তারপর সংক্রমণের হার নিম্নগামী হবে। ফ্রান্সে রবিবার ৩৫৭ জন কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু ঘটেছে, যা আগের দিনের চেয়ে ৮৪ জন কম। ফ্রান্সে মৃতের সংখ্যা ব্রিটেনের থেকে বেশি, দেশটিতে প্রায় ৮ হাজার জন মারা গেছে করোনাভাইরাসে, আক্রান্তের সংখ্যাও ৯০ হাজার ছাড়িয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখের কাছাকাছি যাওয়ার পাশাপাশি মৃতের সংখ্যাও একদিনে প্রায় ৭ শতাংশ বেড়েছে জার্মানিতে। দেশটিতে মারা গেছেন ১ হাজার ৩৪২ জন। এক দিনে মৃতের সংখ্যা বেড়েছে শতাধিক জন, আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৬ হাজার জন। ইরানে মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধির গতি টানা পঞ্চম দিন কমতে থাকায় দেশটির সরকার আগামী ১১ এপ্রিল থেকে সীমিত আকারে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরুর কথা ভাবছে।