ফের বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদে শেখ হাসিনা? “পদত্যাগ” নিয়ে জলঘোলা

দিল্লি: শেখ হাসিনা কী আদৌ পদত্যাগ করেছেন? ভাইরাল অডিওতে কিন্তু শোনা যাচ্ছে, শেখ হাসিনা নিজে বলছেন তিনি পদত্যাগই করেননি!শেখ হাসিনা যদি পদত্যাগপত্র না জমা দিয়ে…

hasina cry

দিল্লি: শেখ হাসিনা কী আদৌ পদত্যাগ করেছেন? ভাইরাল অডিওতে কিন্তু শোনা যাচ্ছে, শেখ হাসিনা নিজে বলছেন তিনি পদত্যাগই করেননি!শেখ হাসিনা যদি পদত্যাগপত্র না জমা দিয়ে থাকেন, তাহলে ভবিষ্যতে এটা নিয়ে কী বড় কোনো সমস্যা তৈরি হতে পারে? মহম্মদ ইউনুসের পদ নিয়ে টানাটানি পড়বে না তো?

সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গণঅভ্যুত্থানের মুখে কোনো সরকার প্রধানই ঘোষণা করে পদত্যাগ করেন না। তাহলে জানা দরকার আসলে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের নিয়ম কি?‌

দেখুন বাংলাদেশের সংবিধানের ৫৭ ধারা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর পদ শূন্য হওয়ার জন্য যে কন্ডিশন আছে সেগুলোর মধ্যে একটা রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া। আর দুই নম্বর, সংসদ সদস্য পদে না থাকা।

সেই অনুযায়ী দেখলে গত ৫ই অগাস্ট বাংলাদেশ এর রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিন জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে বলেন, তিনি শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন এবং তার পরের দিন তিনি দ্বাদশ সংসদ ভেঙ্গেও দেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, যদি তর্কের খাতিরেও ধরেও নেওয়া হয় শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি, তবে এই বিষয়টি তো স্টেট নেসেসিটি থিউরিতে চলে গেছে। তাছাড়া হাসিনা তো কারো কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের অপেক্ষা করেন নি। তিনি তো দেশ ত্যাগ করেছেন। এরপর রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দিয়েছে। সংসদ ভাঙার পর ওনার তো প্রধানমন্ত্রীত্ব করার আর কোন সুযোগ থাকে না। তাছাড়া, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগপত্র দিয়েছেন কী দেননি, এটা বলার একমাত্র এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির। তিনি যেহেতু ওই দিনই বলেছেন শেখ হাসিনা তার কাছে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন, সুতরাং এখন অস্বীকার করলেও পদত্যাগ কার্যকর হতে কোন বাঁধা নেই, বলছেন ওপার বাংলার আইনজীবীদেরই একাংশ।

জানিয়ে রাখি, এই বিষয় নিয়ে প্রথম ধোঁয়াশা তৈরি হয় গত মাসে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বক্তব্যের জের ধরে। তিনি বলেছিলেন, ‘মা কখনই আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেননি। কারণ তিনি সে সময় পাননি।’ এরপরই শুরু হয় গুঞ্জন। আর সম্প্রতি বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এক আওয়ামী লীগ কর্মীর সাথে শেখ হাসিনার একটি ফোনালাপের অডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। যে অডিওতে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, “আমি তো পদত্যাগ করি নাই। আমাদের সংবিধানের ৫৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যেভাবে পদত্যাগ করতে হয় আমার কিন্তু সেভাবে পদত্যাগ করা হয় নি। বঙ্গভবনে গিয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা আমি দেই নাই। কাজেই আমার পদত্যাগ হয় নি। আমি এখনো বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী”। যদিও ওই অডিও রেকর্ডিং এর সত্যতা যাচাই করেনি আজ বিকেল।

কিন্তু, একটা বিষয় পরিষ্কার। হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদেই আছেন কিনা, তা নিয়ে যত ধোঁয়াশা তা বিশেষ জটিলতা তৈরি করবেনা আগামী দিনে। অন্তত বাংলাদেশের সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও আইনজীবীদের মত তেমনি।‌ আর এই যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন। সেটাও গণঅভ্যুত্থানের বিশেষ পরিস্থিতিতে ওই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। মনে করছেন বাংলাদেশের সংবিধান বিশেষজ্ঞরা।