বাথরুমের মধ্যে ট্রাম্প আমাকে চূড়ান্ত যৌন হেনস্থা করেছিলেন, বিস্ফোরক প্রাক্তন মডেল

'দ্য গার্ডিয়ান'কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন মডেল অ্যামি ডরিসের দাবি, ১৯৯৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর, নিউইয়র্কে ইউএস ওপেন টেনিসে ভিআইপি স্যালুটের সময় তাঁকে চরম যৌন হেনস্থার শিকার হতে হয় ট্রাম্পের হাতে।  

ওয়াশিংটন:  মার্কিন মুলুকে এখন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের হাওয়া। নিয়ম অনুযায়ী এখানে এই নির্বাচন হয়ে থাকে প্রতি চার বছর অন্তর নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় মঙ্গলবার। সেইমতো এবারের নির্বাচন আগামী ৩ নভেম্বর। আর প্রেসিডেন্টের ভাবমূর্তির স্বচ্ছতা বজায় রাখার এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আবারও যৌন হেনস্থার অভিযোগ। অভিযোগ আনলেন প্রাক্তন মডেল অ্যামি ডরিস। ১৯৯৭ সালের ঘটনা, যখন তাঁর বয়স ছিল ২৪ বছর। সেদিন ট্রাম্মের হাতে চূড়ান্ত যৌন হেনস্থার ভয়ঙ্কর স্মৃতি তিনি তুলে ধরেছেন ‘দ্য গার্ডিয়ান’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে। এই  প্রাক্তন মডেলের দাবি সেই বছর ৫ সেপ্টেম্বর, নিউইয়র্কে ইউএস ওপেন টেনিসে ভিআইপি স্যালুটের সময় তাঁকে চরম যৌন হেনস্থার শিকার হতে হয় ট্রাম্পের হাতে।  

সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি সেদিনের সেই ঘটনা বিস্তারিত বিবরণ দিতে গিয়ে, ট্রাম্পকে ‘অসুস্থ’ ও ‘হিংসাত্মক’ বলে উল্লেখ করে অ্যামি জানিয়েছেন, সেদিন ইউএস ওপেন টুর্নামেন্ট চলাকালীন ভিআইপি বক্সের বাথরুমের সামনে ৫১ বছর বয়সী ট্রাম্পের সামনে বড়ই অসহায় ছিলেন তিনি। ট্রাম্প তাঁকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরেন। এরপর তাঁর গলায় জিভ দিয়ে স্পর্শ করেন। এরপর তাঁর নিতম্ব, বুক, পশ্চাতদেশ সমস্ত কিছুই স্পর্শ করতে থাকেন ট্রাম্প। তিনি তাঁকে এতটাই শক্ত করে চেপে ধরেছিলেন যে কোনোভাবেই হাত ছাড়িয়ে বেরিয়ে আসতে পারছিলেন না অ্যামি। যদিও পরে নিজের আইনজীবীর মাধ্যমে এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন ট্রাম্প।

গতবছরই বিশিষ্ট আমেরিকান সাংবাদিক ই জিন ক্যারল দাবি করেন, ৯০ এর মাঝামাঝি সময়ে একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের চেঞ্জিং রুমে ট্রাম্প তাঁকে ধর্ষণ করেছিলেন। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে এই ধরণের যৌন নিগ্রহ সংক্রান্ত অভিযোগ নতুন কিছ নয়। পর্ণস্টার থেকে শুরু করে সাংবাদ কর্মী, কে নেই নারীদের সেই তালিকায়? এমন এক ডজনেরও বেশি  অভিযোগ এসেছে তাঁর বিরুদ্ধে। তবে হোয়াইট হাউসের দৌলতে এই সমস্ত অভিযোগ ধুয়ে মুছে সাফ করে দিয়েছেন ট্রাম্প।

২০১৬ সালের নির্বাচনের কিছু আগে, ২০০৫ সালের একটি টেপ রেকর্ডিংয় প্রকাশ্যে আসে, যেখানে নিজের গলাতেই তাঁর গৌরবগাঁথা শোনা গিয়েছিল, যে কীভাবে তাঁর খ্যাতি তাঁর যৌনাঙ্গকে ইচ্ছেমত যেকোনও নারীর ‘দখল’ নেওয়ার ক্ষমতা দিয়েছে।  যদিও ট্রাম্প একে ঠাট্টা বলে উড়িয়ে দিয়ে পরে ক্ষমা চেয়েছিলেন। অ্যামি নিজের সাক্ষাৎকারের পাশাপাশি, পরবর্তী কালে  ট্রাম্পের সংস্থায় নিজের উপস্থিতি প্রমাণ করার জন্য বেশ কয়েকটি ছবিও দিয়েছিলেন ‘দ্য গার্ডিয়ান’কে। যেখানে একাধিক ব্যাক্তি সংবাদমাধ্যমের অ্যাকাউন্টে জানিয়েছেন যে সেই সময় এই ঘটনার কথা তাদের জানিয়েছিলেন অ্যামি। তবে এই ঘটনার পরেও অ্যামি ট্রাম্পের সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছিলেন কেন? সেই প্রশ্নের উত্তরে প্রাক্তন মডেল বক্তব্য কিছুটা এমন ছিল, যে ট্রাম্পের মত ব্যক্তিত্বের নাম যখন এই ঘটনায় জড়িয়েছে, তখন এমন অনেক কিছুই ভবিতব্য ছিল।

প্রসঙ্গত, গার্ডিয়ানকে তার এই ঘটনা সম্পর্কে এক বছরেরও বেশি সময় আগে জানিয়েছিলেন এই প্রাক্তণ মডেল। তবে তা প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। এদিকে ট্রাম্পের আইনজীবীদের তরফে এই সংবাদপত্রকে জানানো হয়েছে যে, ঘটনার পুরোটাই মিথ্যেঝ এবং যদি তাঁর উপর হামলা হয়ে থাকত তবে আরও সাক্ষী থাকতেন। তাঁদের মতে জো বিডেনের মুখোমুখি হওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে,এই অভিযোগটি  ভীষণভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × three =