নয়াদিল্লি: গ্রেটা থুনবার্গের দেখানো পথে এবার জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিবাদে এবার আগুন জ্বালাল ১১ বছরের ভারতীয় কিশোরী৷ হরিদ্বারের কিশোরীর ঋদ্ধিমা পাণ্ডে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিবাদে আওয়াজ তুললেন রাষ্ট্রপুঞ্জের৷
সম্প্রতি, সুইডেনের কিশোরী গ্রেটা থুনবার্গের সঙ্গে রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চে দাঁড়িয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে সোচ্চার হতে দেখা যায় ভারতীয় কিশোরী ঋদ্ধিমাকে৷ পরিবেশ দূষণ রুখতে আর্জেন্তিনা, ব্রাজিল, ফ্রান্স, জার্মানি, তুরস্কের তরফে কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ না নেওয়ায় রাষ্ট্রপুঞ্জে পিটিশন দাখিল করেছে ছোট্ট ঋদ্ধিমা৷
ঋদ্ধিমার বাবা দীনেশ পাণ্ডে পেশায় ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া’র সংরক্ষণবিদ৷ মা বিনীতা পাণ্ডে উত্তরাখণ্ডের বন দপ্তরের বিট অফিসার৷ ২০১৩ সালে উত্তরাখণ্ডের ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় শতাধিক মানুষকে ঠেলে দিয়েছিল মৃত্যু মুখে৷ তারপর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়েছে সেখানকার পরিস্থিতি৷ কিন্তু সেই সময় প্রকৃতির ভয়াবহ ধ্বংসলীলা গভীর ছাপ ফেলছিল পরিবেশ ও বন্যপ্রাণীপ্রেমী পাঁচ বছরের ছোট্ট ঋদ্ধিমার মনে৷
এই প্রসঙ্গে ঋদ্ধিমার বাবা দীনেশবাবু জানান, ‘‘ছোট থেকেই ও খুব কৌতূহলী৷ প্রাণীহত্যা কেন হয়? গাছ কেন কাটা হয়? কেন এই বিপর্যয়? প্রভৃতি নানান প্রশ্ন প্রথম থেকেই ওকে ভাবিয়ে তুলতো৷ আর সেসবের উত্তর খুঁজতেই আমাকে নানান প্রশ্নে অতিষ্ঠ করে তুলেছিল৷’’ এরপর ২০১৭ সালে ন’বছরের ঋদ্ধিমা সোজা পিটিশন দাখিল করে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালে৷ ঋদ্ধিমার কথায়, ‘‘আমি পরিবেশ, বন্যপ্রাণী ভালোবাসি৷ বন্যায় বন্যপ্রাণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে৷ সরকারের প্রতিশ্রুতি শুধুই খাতায়-কলমে৷ কাজের কাজ কিছুই হয়নি৷ কেন হয়নি? এর উত্তর পেতে আমি পিটিশন দাখিল করেছিলাম৷’’
বছরের বিভিন্ন সময়ে পরিবেশ সংক্রান্ত সেমিনারে যেতে হয় তাকে৷ সেই কারণে নিয়মিত স্কুলে যেতে পারেন না ঋদ্ধিমা৷ কিন্তু এতকিছু সামলেও পড়াশোনায় ফাঁকি নেই তার৷ বাবা-মা আর সহপাঠীদের সহযোগিতায় স্কুলেও প্রথম ঋদ্ধিমা৷ বিনীতার মা জানান, ‘‘ছোট্ট মেয়েটির থেকে অনেক কিছু শিখছি৷ অভিভাবক হিসেবে ওর পাশে থাকার চেষ্টা করি৷ কিন্তু অতিরিক্ত পরিচিতিতে মাথা যাতে না ঘুরে যায়, সেদিকেও নজর রাখা প্রয়োজন৷’’
তবে, বয়সে ছোট হলেও ঋদ্ধিমা তার সমবয়সীদের থেকে আলাদা৷ প্রমাণ তার কথায়৷ ঋদ্ধিমার কথায়, ‘‘অনেকেই বলেন, কেন আমি এসব করি? শিশুরা এসব করে না৷ তাঁদের আমি এখনও বোঝাতে পারি না, বড়রা না করলে শিশুরাই তো এগিয়ে আসবে৷’’ মুম্বইয়ের আরে কলোনিতে গাছ কাটা রুখতে নিজেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে আবেদন করেছে ঋদ্ধিমা৷