কুইতো: চুলে পাক ধরেছে বহুকাল আগে৷ ভাঁজ পড়েছে চামড়ায়৷ শরীরও অশক্ত৷ কিন্তু এ সবই তো বাহ্যিক৷ মনটাই যে আসল৷ যে মন জুড়ে আজও তারুণ্যের ছোঁয়া৷ হৃদয়জুড়ে শুধুই একে অপরের প্রতি আবেগ আর ভালোবাসা৷ একে অপরের হাত ধরেই পার করলেন ৭৯টা বছর৷ গড়লেন বিশ্ব রেকর্ড৷ বিশ্বের প্রবীণতম দম্পতির তকমা দিলেন জিতে নিলেন ইকুয়েডরের বাসিন্দা ১১০ বছরের জুলিয়ো সিজার মোরা তপিয়া আর ১০৪ বছরের ওয়ালড্রামিনা ম্যাক্লোভিয়া কুইন্টেরো রেস৷ তাঁদের সম্মিলিত বয়স ২১৪ বছর ৩৫৮ দিন৷
আরও পড়ুন- বিশ্বের দীর্ঘতম মোহওয়াক, গিনেস বুকে নাম তুললেন আমেরিকার জোসেফ
স্কুলের ছটিতে দিদির বাড়ি ঘুরতে গিয়েছিলেন ওয়ালড্রামিনা৷ সেখানেই জুলিয়োর সঙ্গে প্রথম আলাপ হয় তাঁর৷ ওয়ালড্রামিনার দিদি আর জুলিয়ো এক বিল্ডিংয়েই থাকতেন৷ জামাইবাবুই তাঁদের প্রথম আলাপ করিয়ে দেন৷ বন্ধুত্ব থেকেই শুরু হয় প্রেম৷ অসাধারণ কবিতা লিখতে পারতেন জুলিয়ো৷ তাঁর কবিতায় মুগ্ধ হয়েছিলেন ওয়ালড্রামিনা৷ জুলিয়োর মধ্যে খুঁজে পেয়েছিলেন যুব চেতনা, দেখেছিলেন সাহিত্য সম্ভাবনাময় এক প্রেমময় মানুষ৷ আর ওয়ালড্রামিনার রূপ আর উদার মানসিকতায় আকৃষ্ট হয়েছিলেন জুলিয়ো৷ সাত বছর প্রেমপর্বের পর একে অপরকে আই ডু বলেন তাঁরা৷ তবে এই বিয়েতে সম্মতি ছিল না দুই পরিবারের৷ পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়েই ১৯৪১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি গাঁটছড়া বাঁধেন তাঁরা৷
আরও পড়ুন- বন্দুকবাজ সন্দেহে গুলি, পরে অভিযুক্তের পকেটে মিলল চিরুনি
৭৯ বছরের বিবাহিত জীবনের রহস্য কী? এর জবাবে এই ‘তরুণ’ দম্পতি বললেন, ‘‘ভালোবাসা, পরিপক্কতা এবং একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা’’৷ এই ৭৯ বছর ধরে একে অপরের সঙ্গে অনেক সুন্দর সুন্দর আর খুশির মুহূর্ত কাটিয়েছেন ওয়ালড্রামিনা আর জুলিয়ো৷ আর পাঁচটা দম্পতির মতো চলার পথে এসেছে প্রতিবন্ধকতা, কঠিন চ্যালেঞ্জ৷ তবে একে অপরের হাত ধরে সেই সবকিছুই অতিক্রম করেছেন এই দম্পতি৷
জুলিয়ো সিজারের জন্ম ১৯১০ সালের ১০ মার্চ৷ ওয়ালড্রামিনার জন্ম ১৯১৫ সালের ১৬ অক্টোবর৷ দু’জনেই এক সময় শিক্ষকতা করেছেন৷ এখন উপভোগ করছেন অবসর জীবন৷ পাঁচটি সন্তান রয়েছে ওয়ালড্রামিনা আর জুলিয়োর৷ সবচেয়ে বড় কথা হল, আজও সকলে মিলে একসঙ্গে রয়েছেন তাঁরা৷