বেজিং: লং ডিসট্যান্স রিলেশনশিপের ক্ষেত্রে সম্পর্ক ভাঙার আশঙ্কা করেন অনেকেই। তার চেয়ে কাছে থাকাই বুঝি সম্পর্ক স্বাভাবি রাখে। কিন্তু চীনের কাহিনি রীতিমতো উলোট-পুরান। করোনা পরিস্থিতিতে ঘরবন্দি দম্পতিদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে সম্পর্কের ভাঙন। ফাইল হচ্ছে ডিভোর্সের মামলা। গত কয়েকমাস ধরে সেই প্রবণতা অস্বাভাবি হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই দেশে। আর তার কারণ সেলফ-কোয়ারেন্টাইন। শুনতে অবাক লাগলেও এমনই দাবি করেছে সংবাদসংস্থা ফিনান্সিয়াল টাইমস।
এমনিতেই চীনে বিবাহ-বিচ্ছেদের ঘটনা আকছার লক্ষ্য করা যায়। গত এক দশকে যে হারে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছিল তা প্রায় দ্বিগুন হয়েছে গত বছরে। প্রায় ৪০ লক্ষ ডিভোর্সের খবর পাওয়া গেছে সেই দেশে। বিশেষত মহিলাদের ক্ষেত্রে তাঁদের দাম্পত্য জীবন অসহ্য হয়ে উঠছে বলেই খবরে প্রকাশ। তবে সেই হারও টপকে দিল সম্প্রতি। সংবাদসূত্রের দাবি, সেলফ কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক করায় চীনে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে।
বিশেষত জানুয়ারি মাস থেকে সেই দেশে ঘরবন্দির নিয়ম জারি হওয়ার ফলে স্বামী স্ত্রীকে এক ছাদের নীচে সময় কাটাতে হচ্ছে। তার জেরেই শুরু হচ্ছে দাম্পত্য কলহ। হেলেন হু নামে চীনের একটি মেশিন টুলস কারখানার অ্যাকাউন্ট্যান্ট এক মহিলা বলেন, 'ঘর পরিষ্কার থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা, সবই আমাকে করতে হচ্ছে। আমার স্বামী সবসময় ভিডিও গেম নিয়ে ব্যস্ত।' ৩৮ বছরের ওই মহিলা বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
হাংঝৌ এলাকার আইনজীবী পান জুন বলেন, 'করোনা সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ডিভোর্সের হার বেড়েছে।' এর ফলে ডিভোর্স মামলা ফাইল করতে গিয়েও সমস্যায় পড়ছেন সেদেশের মানুষ। এক সরকারি আধিকারিকের কথায়, আগে যেখানে মামলা ফাইল করার ক্ষেত্রে এক সপ্তাহের মধ্যে অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেত দম্পতিরা, বর্তমানে সেক্ষেত্রে এক মাস অপেক্ষা করতে হয়। তাছাড়া এত পরিমাণে ডিভোর্সের আবেদন জমা পড়ছে যে, রেজিস্ট্রি অফিস থেকেও জারি করা হচ্ছে একাধিক নির্দেশিকা।