জেনেভা: বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে করোনায় প্রবলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলিকে আরও বেশি করে ‘জাগ্রত’ হতে হবে৷ ঝগড়া-অশান্তির বদলে জোড় দিতে হবে করোনা নিয়ন্ত্রণের উপর৷ শুক্রবার বিশ্বের করোনা বিধ্বস্ত দেশগুলির উদ্দেশ্যে এই বার্তাই দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)৷
এদিন জেনেভায় একটি সাংবাদিক বৈঠকে হু-র ইমার্জেন্সিস ডিরেক্টর মাইকেল রায়ান বলেন, ‘‘মানুষকে আরও বেশি করে জাগ্রত ও সতর্ক হতে হবে৷ কারণ, তথ্য মিথ্যে কথা বলছে না৷ বাস্তব পরিস্থিতি মিথ্যে কথা বলছে না৷’’ গত বছরের শেষে চিনে প্রথম মাথাচাড়া দেয় এই মারণ ভাইরাস৷ এর পর বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশকে গ্রাস করেছে করোনা৷ আক্রান্ত হয়েছেন ১০.৮ মিলিয়ন মানুষ৷ বিশ্বজুড়ে মৃত্যু হয়েছে ৫,২১,০০০জনের৷ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমেরিকা৷ করোনায় অধিকাংশ মৃত্যুই হয়েছে মার্কিন মুলুকে৷ লাতিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি দেশে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা আকাশ ছোঁয়া৷
ব্রাজিল এবং মেক্সিকোর মতো দেশগুলির পরিস্থিতি খুবই সংকটজনক৷ করোনা সংক্রমণ এবং মৃতের সংখ্যা হু হু করে বাড়লেও, লকডাউনের পথে থেকে সরে এসেছে তারা৷ রায়ান বলেন, ‘‘অধিকাংশ দেশই তথ্যকে অস্বীকার করছে৷’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এই দেশগুলি এখন অর্থনীতির উপর জোড় দিচ্ছে৷ এর প্রয়োজনীয়তা আমরা বুঝতে পারছি৷ কিন্তু বাস্তব সমস্যাকেও তারা উপেক্ষা করতে পারে না৷ এই সমস্যা ম্যাজিকের মতো উধাও হয়ে যাবে না৷’’ রায়ানের কথায়, ‘‘এই দেশগুলির সামনে কিছু সহজ পথ ছিল৷ যা তারা অবলম্বন করতে পারত৷ এখনও খুব বেশি দেরি হয়নি৷ এখনও এই মহামারীকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব৷’’
তাঁর সুপারিশ, গোটা দেশে লকডাউন জারি করার পরিবর্তে সমস্যা মেটানোর উপর জোড় দিতে হবে৷ যে সকল জায়গায় সংক্রমণের হার কম, সেখানে লকডাউন শিথিল করা যেতেই পারে৷ তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, বারেবারে হাত ধোয়া, পরীক্ষা করা, আইসোলেশনে থাকা এবং কনট্যাক্ট ট্রেসিং চালিয়ে যেতে হবে৷ কিন্তু যে সকল অঞ্চলে করোনার প্রকোপ অত্যন্ত বেশি, সেখানে কড়া সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে৷ রায়ান সতর্ক করে বলেন, যে সকল দেশ এই সমস্যা মোকাবিলা করার ক্ষমতা ছাড়াই এগিয়ে চলেছে, তাদের আরও খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে৷ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়লে আরও বেশি মানুষের মৃত্যু হবে৷’’