ওয়াশিংটন:করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় বিশ্বজুড়ে সচেতনতার দৃষ্ঠান্ত চোখে পড়েছে। গোটা পৃথিবী জুড়ে প্রায় একই অবস্থা। কোথাও স্কুল, কলেজ বন্ধ, কোথাও আবার বন্ধ দোকানপাট। এই পরিস্থিতিতে গবেষকরা যে তথ্য সামনে এনেছেন, তা শুনলে অবাক হবেন আপনিও। তাঁদের দাবি, করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় গোটা বিশ্ব যে পদক্ষেপ করেছে, তার ফলে দূষণজনিত ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রেহাই পাবেন প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষ।
সম্প্রতি ফ্রান্স ২৪ চ্যানেলের একটি বিতর্কসভায় আলোচিত হয়েছে এই পরিসংখ্যান। হুগো অবজার্ভেটরির ডিরেক্টর ফ্রঁসয়েস জেমেন সেখানে বলেছেন, হয়তো অবাক লাগবে শুনতে, কিন্তু তাঁর মনে হয়, করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক ভবিষ্যতে পরিবেশ দূষণজনিত মৃত্যুর হাত থেকে বিশ্ববাসীকে কিছুটা হলেও নিরাপদে রাখবে। পরিসংখ্যান বলছে, ফ্রান্সে এক বছরে গড়ে ৪৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় দূষণের কারণে। চায়না ইউনিভার্সিটি অফ হং কং-এর একটি গবেষণা বলছে, বছরে গড়ে ১০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয় চীনে, যার নেপথ্যে রয়েছে পরিবেশ দূষণই। এছাড়াও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) পরিসংখ্যান বলছে, গোটা বিশ্বের নিরিখে প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর পেছনে রয়েছে পরিবেশ দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব। এই বিশাল সংখ্যক প্রাণনাশের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে। সেই ক্ষেত্রে অন্যতম ভূমিকা নিতে পারে করোনা ভাইরাস আতঙ্ক।
এর পক্ষে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসেই যুক্তি দিয়েছিল একটি বেসরকারি গবেষণা সংস্থা, কার্বন ব্রিফ। তাদের একটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে, করোনা আতঙ্কের জেরে চীনে দূষণের মাত্রা বহুগুণ হ্রাস পেয়েছে। উদাহরণস্বরূপ উঠে এসেছে, করোনা মোকাবিলায় সতর্কতার কথা। বহু কলকারখানায় সাময়িক বিরতি চলছে। বহু অফিসে বাড়ি বসে কাজ করার বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর ফলে বিশাল সংখ্যক মানুষ বাড়ির বাইরে বেরচ্ছেন না। ফলে গাড়িঘোড়া বা কলকারখানার দূষণ অনেকাংশেই লাগামে এসেছে। এই কারণেই করোনা আতঙ্কের ফলে পরোক্ষভাবে পরিবেশ তথা আমাদের মঙ্গলসাধনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন হুগো অবজার্ভেটরির ডিরেক্টর।