মাথা জোড়া যমজ ভাই, ৩৩ ঘণ্টার জটিল অস্ত্রোপচারে পেল নতুন জীবন

মাথা জোড়া যমজ ভাই, ৩৩ ঘণ্টার জটিল অস্ত্রোপচারে পেল নতুন জীবন

কলকাতা: মাতৃগর্ভ থেকেই তারা অবিচ্ছেদ্য৷ জন্মের পর দেখা যায় যমজ ভাইয়ের মাথা জোড়া৷ কোনও ভাবেই আলাদা হওয়ার উপর নেই তাদের। বিরল সমস্যার জন্য এভাবে জন্ম হয় তাদের। তিন বছর মাথা জোড়া অবস্থাতেই বড় ওঠে যমজ দু’ভাই৷ অবশেষে জটিল অস্ত্রোপচার করে ব্রাজিলের এই যমজকে আলাদা করলেন ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত এক চিকিৎসক৷ 

জন্ম থেকেই বার্নার্ডো এবং আর্থার লিমা নামে ওই দুই ভাইয়ের মস্তিস্ক ছিল একসঙ্গে জোড়া। ফলে জন্ম থেকেই তারা শয্যাশায়ী৷ অবশেষে চিকিৎসকের দক্ষতায় ‘পৃথক’ জীবন পেল তারা। এই অসাধ্যসাধন করেন রিও-ডি-জেনেইরোর গ্রেট অর্মন্ড স্ট্রিট হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক সার্জন নূর উল ওয়াসে জিলানি। ১০০ জন চিকিৎসা-কর্মীর সহায়তায় ৩৩ ঘণ্টা ধরে মোট ৭টি অস্ত্রোপচার করার পর পৃথক শরীর পায় দুই ভাই। নূর উল ওয়াসে জিলানির পাশাপাশি চিকিৎসকদের এই টিমকে নেতৃত্ব দেন আরেক চিকিৎসক গ্যাব্রিয়েল মুফারেজ।

চিকিৎসা বিজ্ঞানে এ এক ‘উল্লেখযোগ্য সাফল্য’৷  ডাঃ মুফারেজের কথায়, আড়াই বছর আগে যমজ সন্তানের চিকিৎসার জন্য রোরাইমা থেকে রিওতে চলে আসে বার্নার্ডো এবং আর্থার পরিবার। তাঁরা এই হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসার পর থেকেই আমাদের পরিবারের মতো হয়ে গিয়েছিল। এই জটিল অস্ত্রোপচার সফল হওয়ায় আমরা খুবই খুশি। এই সাফল্য ওই দুই শিশু এবং ওদের পরিবারের জীবন বদলে দিয়েছে৷ 

মাথা জোড়া দুই শিশুর অস্ত্রপচারের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে ‘জেমিনি আনটুইন্ড’ নামে একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান চালু করেছিলেন ডাঃ জিলানি। ওই প্রতিষ্ঠানটির দাবি, আর্থার এবং বার্নার্ডোকে পৃথক করার জন্য যে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে, তা এখনও পর্যন্ত সফল হওয়া জটিল অস্ত্রোপচারগুলির মধ্যে একটি৷ চিকিৎসকদের একাংশের ধারণা ছিল, এই অস্ত্রোপচার সফল হবে না। অনেক মনে সন্দেহ থাকলেও পিছিয়ে আসেননি ডাঃ জিলানি। তিনি মনস্থির করেন, শেষ পর্যন্ত লড়াই করবেন।

এরপরেই তিনি চিকিৎসক এবং চিকিৎসাকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু করেন। আসল অস্ত্রোপচারের আগে প্রায় এক মাস ধরে ‘ভার্চুয়াল রিয়ালিটি’র সাহায্যে অস্ত্রোপচারের মহড়া চলে৷ অবশেষে আসে সাফল্য৷ আপাতত হাসপাতালের পর্যবেক্ষণেই রয়েছে ছোট্ট আর্থার এবং বার্নার্ডো। তারা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছে বলেও জানিয়েছে  হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷