ওয়াশিংটন: সীমান্তে ভারতের বিরুদ্ধে আগ্রাসী মনোভাব নিয়েছে চিন৷ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে পড়েছিল চিনা লাল ফৌজ৷ একইভাবে ভুটানের সীমান্তও লঙ্ঘন করে সে দেশের ভূখণ্ডেও ঢুকে পড়েছে চিনা সেনা৷ ভুটানের উপরেও আঞ্চলিক দাবি জানাচ্ছে বেজিং৷ চিনের এই আচরণের জন্য ফের একবার তীব্র নিন্দা করল আমেরিকা৷
বৃহস্পতিবার চিনের কড়া সামালোচনা করে মার্কিন বিদেশমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেন, ভারত ও ভুটানের এলাকায় সেনা ঢুকিয়ে শি জিনপিং-এর নেতৃত্বাধীন বেজিং আসলে দেখতে চাইছে বিশ্বের অন্য দেশগুলো তাদের আগ্রাসনের বিরোধিতা করে কিনা৷ গত ৫ মে থেকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তেজনার পাদর চড়ছে৷ গত মাসে গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চিন সেনার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে৷ ওই সংঘর্ষে প্রাণ হারান ২০ ভারতীয় জওয়ান৷ ভারতের পাশাপাশি ভুটানের প্রতিও আগ্রাসী মনোভাব নিয়েছে বেজিং৷
সম্প্রতি গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফেসিলিটি (জিইএফ) কাউন্সিলে ভুটানের সাকতেং অভয়ারণ্যকে নিজেদের বলে দাবি জানিয়েছিল চিন এবং এই প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দের বিরোধিতাও করে তারা৷ বৃহস্পতিবার মাইক পম্পেও বলেন, এটা চিনের কৌশলী চাল৷ ভারত ও ভুটানের উপর নিজেদের দাবি জানিয়ে তারা দেখতে চাইছে বিশ্বের কোন কোন দেশ তাঁদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার ক্ষমতা রাখে। তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, গত কয়েক দশক ধরেই এই ধরনের আচরণের মাধ্যমে গোটা বিশ্বকে একটা বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করছে চিন৷ শি জিনপিনং ক্ষমতায় আসার পর থেকে চিনের এই দৌরাত্ম আরও বহুগুণ বেড়ে গিয়েছে৷ তাঁর অঙ্গুলিহেলনেই সব কিছু হচ্ছে৷’’ নিজেদের শক্তি বাড়াতে অন্যের এলাকাও কব্জা করতে চাইছে চিন৷
মার্কিন বিদেশমন্ত্রীর কথায়, ‘‘ মুখে বিশ্বের সামনে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বুলি আওড়ালেও, আদতে তারা তা মানে না৷ এখন ভুটানের জমিও নিজেদের বলে দাবি করছে তারা। সম্প্রতি ভারতেও চিনা সেনাবাহিনীর অনুপ্রবেশ ঘটেছিল। এর পিছনে চিনের আসল উদ্দেশ্য হল, তারা যাচাই করে দেখছে যে তাদের এই আগ্রাসী মনোভাবের বিরুদ্ধে কেউ রুখে দাঁড়াচ্ছে কিনা? পর্যবেক্ষণ করে দেখছে যে, তাদের এই আচরণে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো কী প্রতিক্রিয়া দেয় এবং তাঁদের পাল্টা হুঁশিয়ারি দেয় কিনা?” পম্পেও আরও বলেন, ‘‘আমি এখন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারি যে, সারা বিশ্ব চিনের মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত। এই বিষয়ে আমাদের আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে৷’’