বেজিং: তিব্বতে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর ফের বাঁধ নির্মাণ পরিকল্পনা নিল চিন৷ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্যই এই বাঁধ বলে জানিয়েছে চিনের সরকারি মুখপত্র গ্লোবাল টাইমস৷ ১৪ তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় এই বাঁধ নির্মাণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে৷ আগামী বছর অর্থাৎ ২০২১ থেকে শুরু হবে বাঁধ নির্মাণের কাজ৷ তিব্বতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার খুব কাছে ইয়ারলাং জ্যাংবো নদ (তিব্বতে ব্রহ্মপুত্র নদের নাম)-এর উপর এই বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তোলা হবে৷
আরও পড়ুন- সরকারি নিয়মের অন্যথা করলেই জুটছে শাস্তি, উত্তর কোরিয়ায় ইতিমধ্যেই ২ জনের মৃত্যুদণ্ড
কিন্তু ব্রহ্মপুত্র নদীর উপর এই বাঁধ নির্মাণের প্রস্তাবে উদ্বিগ্ন ভারত ও বাংলাদেশ৷ কারণ ইয়ারলাং জ্যাংবো তিব্বতের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে প্রবেশ করেছে অরুণাচলপ্রদেশে৷ সেখানে এই নদীর নাম সিয়াং৷ অসমে প্রবেশ করার পর ইয়ারলাং জ্যাংবোর নাম হয়েছে ব্রহ্মপুত্র৷ তার পর তা প্রবাহিত হয়েছে বাংলাদেশের উপর দিয়ে৷ ব্রহ্মপুত্রের উপর বাঁধ নির্মাণ হলে জল সঙ্কট তৈরি হওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে ভারত ও বাংলাদেশে৷ যদিও ভারত ও বাংলাদেশের দাবি উড়িয়ে চিনের বক্তব্য, এই বাঁধ নির্মাণের ফলে সমস্যায় পড়তে হবে না দুই পড়শি দেশকে৷ ভূ-প্রাকৃতিক অবস্থানের কারণে ভারতের চেয়ে অনেক সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে চিন৷ সে দেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েই জলধারা প্রবেশ করেছে ভারত ও বাংলাদেশে৷ ফলে চিন ব্রহ্মপুত্র নদীর উপর এই বিশাল বাঁধ নির্মাণ করলে তা নিশ্চিতভাবেই প্রভাব ফেলবে৷ ভারতের তরফে বারবার এই বিষয়ে চিনকে সতর্ক করা হয়েছে৷ এই বাঁধ নির্মাণের ফলে যাতে জলপ্রবাহের উপর কোনও প্রভাব না পড়ে তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে৷
আরও পড়ুন- ২০২১-এর মাঝামাঝির মধ্যে আসছে ১০টি করোনা ভ্যাকসিন, সুখবর শোনাল গ্লোবাল ফার্মা
ব্রহ্মপুত্র ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার একাধিক নদীর উৎস চিন থেকে৷ যে নদীরগুলির ৪৮ শতাংশ জলই ভারতের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়৷ ব্রহ্মপুত্রের উপর বাঁধ নির্মাণ করা হলে দুটি সমস্যা দেখা দেবে৷ প্রথমত, সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে বন্যা৷ এমনিতেই উত্তর-পূর্বের নদীগুলিতে প্রতি বছরই বন্যা হয়৷ তার উপর বাঁধের জল ছাড়লে ভেসে যাবে অসম৷ প্রভাবিত হবে বাংলাদেশও৷ আবার বছরের বাকি সময় এই বিস্তীর্ণ অঞ্চলে তৈরি হবে জলের অভাব৷
গ্লোবাল টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী, মেডগ কাউন্টিতে গড়ে তোলা হবে এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প৷ চিনের পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ইয়্যান জিয়ং বলেন, ‘‘চিনের ইতিহাসে এত বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের উদাহরণ নেই৷ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে এই বাঁধ নির্মাণ করা হলেও পরিবেশ সংরক্ষণ, জাতীয় নিরাপত্তা, জীবনযাপনের মানোন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতাও আমাদের লক্ষ্য৷’’