ওয়াশিংটন: রাষ্ট্রসংঘে ফের চিনা কাঁটা। চিনের মদতেই ভেস্তে গেল কুখ্যাত জঙ্গি আবদুল রহমান মক্কিকে নিষিদ্ধ করার ভারত ও আমেরিকার যৌথ প্রয়াস। উল্লেখ্য, পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবার প্রধান হাফিজ সইদের শ্যালক মক্কিক। মুম্বই হামলার অন্যতম ষড়যন্ত্রী হাফিজ সইদের সঙ্গে জেহাদি কাজেও যুক্ত এই মক্কি। এছাড়া কাশ্মীর উপত্যকায় পাক জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ ও অস্ত্র পাচারেও জড়িত সে। এমনকি ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর মুম্বইয়ে যে হামলা হয় তার ব্লু প্রিন্টও তৈরি হয়েছিল হাফিজেরই নেতৃত্বে। কাশ্মীর উপত্যকায় পাক জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ ও অস্ত্র পাচারে জড়িত রয়েছে সে। পাকিস্তানে আল কায়দার ‘স্লিপার সেল’গুলির সঙ্গেও সরাসরি নিয়মিত যোগাযোগ রাখে মক্কি।
এক কথায় বলতে গেলে এই জঙ্গির হাতেই জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর ই তইবার মূল ক্ষমতা। তাকে বাগে আনতে পারলেই অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়বে লস্কর। আর সে জন্যই রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ‘আইএস অ্যান্ড আল কায়দা স্যাংশনস কমিটি’র কাছে আবদুল রহমান মক্কিকে ‘গ্লোবাল টেররিস্ট’ বা আন্তর্জাতিক জঙ্গি ঘোষণার দাবি জানিয়ে একটি প্রস্তাব পেশ করেছিল নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটন। কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য চিনের ভেটোয় সেই প্রস্তাব পাশ হয়নি।
উল্লেখ্য,পাকিস্তানি জঙ্গিদের সঙ্গে বরাবরই কিছুটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক মেনে চলে চিন। রাষ্ট্রসংঘে এর আগেও পাক মদতপুস্ট জঙ্গিদের মদতে এগিয়ে আসতে দেখা গিয়েছে বেজিংকে। কিন্তু ২০১৯ সালে রাষ্ট্রসংঘে বড় কূটনৈতিক জয় হয় নয়াদিল্লির। প্রায় এক দশকের চেষ্টার পর পাক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারকে ‘আন্তর্জাতিক জঙ্গি’ ঘোষণা করে রাষ্ট্রসংঘ। তার আগেই অবশ্য হাফিজ সইদকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদীর তকমা দিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ। হাফিজের মাথার দাম হিসাবে ১০ মিলিয়ন ডলার ধার্য করেছে আমেরিকা। শুধু তাই নয়, ২০১০ সালে আবদুল রহমান মক্কিকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি ঘোষণা করে মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট। তারপর থেকেই আবদুল রহমান মক্কিকে ‘গ্লোবাল টেররিস্ট’ ঘোষণার চেষ্টা চালাচ্ছে নয়াদিল্লি। কিন্তু সম্প্রতি এই কুখ্যাত জঙ্গির পিঠ বাঁচাতে এগিয়ে এসেছে চিন। আর চিনের মদতেই ভেস্তে গেল কুখ্যাত জঙ্গি আবদুল রহমান মক্কিকে নিষিদ্ধ করার ভারত ও আমেরিকার যৌথ প্রয়াস।