চেরনোবিলকে ছাপিয়ে যাবে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিপর্যয়! আতঙ্কের প্রহর গুনছে বিশ্ব

চেরনোবিলকে ছাপিয়ে যাবে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিপর্যয়! আতঙ্কের প্রহর গুনছে বিশ্ব

কিয়েভ: ইউরোপের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এখন রাশিয়ার দখলে। সেই জাপরজাই পরমাণু কেন্দ্রে আছড়ে পড়েছে রুশ ক্ষেপণাস্ত্রও যার পর থেকে সেখানে আগুন জ্বলছে৷ ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক চুল্লিতে যে মাত্রার আগুন ছড়িয়েছে তার বিপদ কাটেনি। যদিও রাশিয়া বাহিনী দাবি করেছে যে, কোনও ভাবে যাতে বিপদ না বাড়ে তার চেষ্টাই করা হচ্ছে। কিন্তু বিপদ হতে কতক্ষণ? আর বিপদ কত ভয়ঙ্কর হবে? এইসব প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা যা বুঝেছেন তাতে বিপর্যয় ঘটলে তা ঠেকানো প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠবে। কারণ, এবার ক্ষতি চেরনোবিলের ১০ গুণ বেশি হতে পারে! এতেই আশঙ্কার প্রহর গোনা শুরু করেছে গোটা বিশ্ব।

আরও পড়ুন- প্রধান শিক্ষকের ঘুসিতে নাক ফাটল অঙ্ক শিক্ষকের, আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি হাসপাতালে

বৃহস্পতিবারই জাপরজাই পরমাণু কেন্দ্রের দখল নেয় রুশ ফৌজ৷ আর শুক্রবার জানা যায়, রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের হামলায় পরমাণু কেন্দ্রের একাংশে আগুন ধরে গিয়েছে৷ এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন জখমও হয়েছেন। এর চেয়েও ভয়ঙ্কর বিষয় হল, পরমাণু কেন্দ্র থেকে ছড়িয়ে পড়তে পারে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ৷ কিছুদিন আগেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের জল্পনা উস্কে দিয়ে রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সেরগেই ল্যাভরভ পরমাণু হামলার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। আর এখন এই ঘটনা। তাই কোনও ভাবেই এই বিষয়টিকে হালকা ভাবে নেওয়ার কোনও জায়গা নেই। বিশেষজ্ঞ যারা আছেন তারা ইতিমধ্যেই বিপদ সঙ্কেত দিয়ে বলে দিয়েছেন যে, এভাবে আগুন জ্বলতে থাকলে ওই এলাকায় ভয়াবহ বিপর্যয় তৈরি হতে পারে। ১৯৮৬ সালে চেরনোবিল পারমাণবিক কেন্দ্রে যে বিপর্যয় ঘটেছিল, তার থেকে ১০ গুণ বেশি ক্ষতি হতে পারে এবার। তাই মনে করা হচ্ছে, রাশিয়া বড় বিপর্যয় এড়াতে ওই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ করে দেবে।

এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই চেরনোবিল আতঙ্ক ঘুরে ফিরে আসছে ইউরোপবাসীর। তাই রাশিয়াকে হুঁশিয়ারি দেওয়ার পাশাপাশি ইউরোপকেও ‘ঘুম’ থেকে জেগে ওঠার পরামর্শ দিয়েছেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। তাঁর কথায়, এখনই যদি কোনও পদক্ষেপ না নেওয়া হয় তাহলে সমূহ বিপদ আগামী দিনে। তিনি জানিয়েছেন, আগুনের ফলাফল কী হবে তা তাদের কারোর জানা নেই। কিন্তু যদি এখানে বিস্ফোরণ হয় তাহলে কারোর হাতেই আর কিছু থাকবে না। এই ইস্যুতে তিনি রাশিয়াকে সন্ত্রাসী দেশ বলে আক্রমণ করে বলেন, ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একটি সন্ত্রাসী দেশ পারমাণবিক সন্ত্রাসের পথে হাঁটছে। ইউরোপের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আগুন লাগার ঘটনা যা মামুলি নয় তা শিশুরাও জানে। তা সত্ত্বেও রাশিয়া কেন তাতে হামলা করল এটা বুঝে উঠতে পারছে না কেউ। চেরনোবিল কাণ্ডের সময়ও একাংশ রাশিয়াকে দোষারোপ করেছিল।

আরও পড়ুন- অখিলেশের খেলা শেষ করতে গিয়েছেন মমতা, কটাক্ষ দিলীপের

কিছুদিন আগে চেরনোবিলেও নতুন করে বেড়েছিল তেজস্ক্রিয়তা। পারমাণবিক শক্তি কেন্দ্রের আশাপাশে হু হু করে বাড়ছিল তেজস্ক্রিয় গামা রশ্মির বিকিরণ, যার মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে প্রায় ২০ গুণ বেশি ছিল। কিন্তু ঠিক কী হয়েছিল চেরনোবিলে? ১৯৮৬ সালে এই চেরনোবিল পরমাণু কেন্দ্রেই বিরাট বিস্ফোরণ হয়। চুল্লির উপরের প্রায় দু’হাজার টন ওজনের ধাতব ঢাকনাটি উড়ে যায় কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে। সেই বিকিরণ ছড়িয়ে পড়ে ১ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকায়। প্রাণ হারান বহু মানুষ, ক্ষতিগ্রস্ত হন কয়েক হাজার জনতা। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 − 5 =