কেউ মজে আইসক্রিমে, কারও চাই নারী, নিজেকে ভালবেসে আবার ৫০ ফুটের সোনার মূর্তি বানান এই একনায়ক!

কেউ মজে আইসক্রিমে, কারও চাই নারী, নিজেকে ভালবেসে আবার ৫০ ফুটের সোনার মূর্তি বানান এই একনায়ক!

কলকাতা: বিশ্ব ইতিহাসের পাতা উল্টালে এমন কিছু শাসকের নাম উঠে আসে, যাঁরা দাপটের সঙ্গে নিজেদের দেশ শাসন করেছেন৷ রাশভারী ব্যক্তিত্ব, কিংবা দোর্দণ্ডপ্রতাপ আচরণ, তাঁদের অন্যদের থেকে ব্যতিক্রমী করে তুলেছে। তাঁরা হয়ে উঠেছেন রাষ্ট্রের সমার্থক৷ তাঁদের নাম কারও অজানা নয়৷ কিন্তু, সেই সব শাসকদের ‘নেশা’র কথা শুনেছেন কি কখনও? সেগুলিও কিন্তু ভারী আজব! চলুন জানা যাক বাদশাহী সে সব শখের কথা৷ 

প্রথমেই আসা যাক কিউবার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রোর কথায়। দুগ্ধজাত খাবার এবং আইসক্রিমের প্রতি বড্ড বেশি ঝোঁক ছিল তাঁর৷ চকোলেট মিল্কশেকে গলা ভেজানো ছিল তাঁর অভ্যাস। শোনা যায়, ফিদেল কাস্ত্রোকে খুন করতে নাকি চকোলেট মিল্কশেকে বিষ মেশানোর ছক কষেছিল সিআইএ। 

মুয়াম্মার গদ্দাফি আবার ছিলেন নারীর প্রতি আসক্ত৷ তবে সব নারী নয়৷ আফ্রিকার সুন্দরী মহিলাদের দেখলেই তিনি ‘পাগল’ হয়ে যেতেন৷ লিবিয়ার এই একনায়ক এক নারীর প্রেমে ‘পাগল’ ছিলেন৷ সেই মহিলা ছিলেন আমেরিকার কূটনীতিক কন্ডোলিজা রাইস। কন্ডোলিজাকে ‘ডার্লিং ব্ল্যাক আফ্রিকান উওম্যান’ বলে সম্বোধন করতেন গদ্দাফি। তবে তাঁর উপর গদ্দাফির এই প্রেম ‘অদ্ভুত’ এবং ‘অশোভনীয়’ বলে মন্তব্য করেছিলেন রাইস৷

অদ্ভূত এক আসক্তি ছিল সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতা জোসেফ স্তালিনের। শোনা যায়, বিবস্ত্র পুরুষদের মুণ্ডহীন দেহের ছবির তাঁকে চুম্বকের মতো আকৃষ্ট করত৷ সোভিয়েত চলচ্চিত্রও ছিল তাঁর পছন্দের৷ 

জার্মানির প্রাক্তন একনায়ক অ্যাডল্‌ফ হিটলারের কঠোর শাসনের কথা কারও অজানা নয়। ব্যক্তিজীবনে একাধিক জিনিসের প্রতি আসক্তি ছিল তাঁর। তিনি ডিজনির ছবি দেখতে ভালবাসতেন। জার্মানির লেখক কার্ল মে’র উপন্যাস ছিল তাঁর বড্ড প্রিয়৷ 

অদ্ভূত এক অভ্যাস ছিল রোমানিয়ার একনায়ক নিকোলা সিউসেস্কুর৷ আসলে এই অভ্যাস বা নেশার নেপথ্যে ছিল তাঁর ভয়৷ পোশাকে বিষ মিশিয়ে তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলতে পারেন শত্রুরা— সবসময় এই আশঙ্কায় ভুগতেন নিকোলা। তাই তিনি একবার যে স্যুট পরতেন, সেটা দ্বিতীয়বার গায়ে জড়াতেন না৷ সেটি তৎক্ষণাৎ নষ্ট করে ফেলা হত। শোনা যায়, তাঁর স্যুটগুলি তালাবন্ধ করে রাখা হত নির্দিষ্ট একটি জায়গায়।

উগান্ডার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইদি আমিন ভালোবেসে ফেলেছিলেন স্কটল্যান্ডকে৷ তাঁর বেশ কয়েক জন স্কটিশ কমান্ডিং অফিসারও ছিলেন। তাঁদের কাছ থেকেই স্কটল্যান্ড সম্পর্কে নানা কথা শুনতেন। স্কটিশ নৃত্য এবং হুইস্কির প্রতিও ছিল তাঁর আমোঘ টান৷ 

লিপিবিদ্যার বা ক্যালিগ্রাফি ছিল চিনের প্রাক্তন শাসক মাও জে দংয়ের নেশা। সেই সময় টাইপরাইটাররের বদলে কালি দিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক নথি লিখতেন তিনি। বলা হয়, মাওয়ের হাতের লেখা নাকি খুবই সুন্দর ছিল।

সংখ্যাতত্ত্বের প্রতি আকর্ষণ ছিল ফিলিপিন্সের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোসের। সাত নম্বর ছিল তাঁর প্রিয় সংখ্যা। তাই যে কোনও কাজে সাত নম্বর তাঁর কাছে আলাদা গুরুত্ব পেত৷ 

নিজের প্রতি অদ্ভূত প্রেম ছিল তুর্কমেনিস্তানের প্রথম প্রেসিডেন্ট সাপারমুরাত নিয়াজভের। নিজেকে ভালোবেসে সোনার পাত দিয়ে নিজের ৫০ ফুট উঁচু মূর্তি গড়িয়েছিলেন তিনি। নিজের নামে শহর, থিম পার্ক, থিয়েটারের নামকরণও করছিলেন নিয়াজভ।

ইরাকের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হুসেন আবার ছিলেন ‘জাঙ্ক ফুড’ প্রেমী। আমেরিকার ফাস্টফুডে ছিল তাঁর আসক্তি৷ বিশেষত, আমেরিকার একটি চিপ্‌স ছিল তাঁর সহচেয়ে পছন্দের৷

হলিউডের ছবি দেখতে কে না ভালবাসেন! কিন্তু যে দেশের সঙ্গে ‘শীতল’ সম্পর্ক, সেই দেশের ছবিই ছিল উত্তর কোরিয়ার একদা শাসক দ্বিতীয় কিম জং উনের সবচেয়ে পছন্দের। শোনা যায়, ৩০ হাজারের মতো ছবি ছিল তাঁর সংগ্রহে৷ 

এ বার আসা যাক উত্তর কোরিয়ার বর্তমান শাসক কিম জং উনের প্রসঙ্গে। তাঁকে ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে কৌতুহলের অন্ত নেই। জানা যায়, তিনি চিজ খেতে বড্ড ভালবাসেন৷ বিশেষ করে সেটা যদি হয় ‘সুইস চিজ’। অনেকেই বলেন, কিমের ওজন বৃদ্ধির এটা নাকি অন্যতম কারণ৷ 
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve + 12 =