বেজিং: টিকটকের ব্যবসায় বড় বদল আনতে মনস্থ করল মূল কোম্পানি বাইটডান্স লিমিটেড। এই চিনা কোম্পানিকে নিয়ে আমেরিকার চিন্তাধারার পরিপ্রেক্ষিতেই এমন বদলের সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। মূলত কর্পোরেট স্ট্রাকচার বদলানোর কথা ভাবা হচ্ছে। আধিকারিকরা বিকল্প হিসেবে নতুন পরিচালন বোর্ডের ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন টিকটকের জন্য। পাশাপাশি বেজিং থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে এই অ্যাপের জন্য চিনের বাইরে অন্য আরেকটি সদর দফতর তৈরিরও ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
শর্ট ভিডিও এবং মিউজিক অ্যাপ টিকটক এখন বাইটডান্সের সদর দফতর কেমেন আইল্যান্ড থেকে পরিচালিত হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টিকটকের এক কর্তা জানিয়েছেন যদিও বিষয়টি সর্বসমক্ষে আনোচনার নয় তবুও তিনি জানাচ্ছেন টিকটকের বিশ্বের বিভিন্ন এলাকায় নিজের সদর দফতরের জন্য স্থান ঠিক করতে শুরু করেছে। এই অ্যাপের প্রধান পাঁচটি অফিস রয়েছে লস অ্যাঞ্জেলস, নিউইয়র্ক, লন্ডন, ডাবলিন, সিঙ্গাপুর। টিকটকের তরফে জানানো হয়েছে তাদের ব্যবহারকারী, কর্মী, শিল্পী, স্রষ্টা, সহযোগীদের কথা ভেবেই তারা পরবর্তী পদক্ষেপ করবেন বলে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন টিকটক কর্তৃপক্ষ। গত দু সপ্তাহ ধরে বেশ টানাপোড়েন চলছে আমেরিকার সবচেয়ে বেশী ডাউনলোড করা এবং টিনএজারদের মধ্যে জনপ্রিয়তম এই অ্যাপ নিয়ে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, করোনা ভাইরাস নিয়ে চিনের গাফিলতির জন্য সেই দেশকে সাজা দিতে তাঁর প্রশাসন এই অ্যাপ নিষিদ্ধ করার কথা ভাবছে। মার্কিন প্রশাসন এই অ্যাপ রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর প্রসঙ্গ সেন্সর করছে এবং কেমন ভাবে অ্যাপটি ব্যক্তিগত তথ্য জমা করে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও আমেরিকাবাসীকে এই অ্যাপ ডাউনলোড করতে মানা করেন যদি না তাঁরা নিজেদের ব্যক্তিগত তথ্য চিনা কমিউনিস্ট পার্টির হাতে তুলে দিতে চান।
এরপরই ট্রাম্প মন্তব্যটি করেন। মিউজিক্যাল ডট লি নামের এক স্টার্ট আপকে নিজের সঙ্গে যুক্ত করা নিয়ে টিকটককে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা রিভিউয়ের মুখোমুখি হতে হয়। যদিও বিষয়টি বারবার অস্বীকার করে টিকটক। এই সপ্তাহের শুরুর দিকে মার্কিন বাণিজ্য কমিশন এবং বিচারবিভাগের তরফে তথ্য সংগ্রহ নিয়ে স্ক্রুটিনি রিনিউ করে। বহু প্রাইভেসি গ্রুপ অভিযোগ তোলে, এই অ্যাপ ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের তথ্য জোগাড় করছে তাদের অভিভাবকদের অনুমতি ছাড়াই, যা মার্কিন আইনে নিষিদ্ধ। লাদাখে সঙ্ঘর্ষের পর ভারতে নিষিদ্ধ হয়ে পড়ে টিকটক। তাই অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে এই অ্যাপ এখন নিজের শিকড় ছিঁড়তেই ব্যতিব্যস্ত।