biden
ওয়াশিংটন: এ কোথায় বাস করছি আমরা! ইজরায়েল-হামাসের যুদ্ধে প্রায় চার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যাদের ৬৪ শতাংশ শিশু ও মহিলা। গাজার বিস্তীর্ণ অংশ বিদ্যুৎ বিহীন। হাসপাতালগুলিতে জেনারেটর চলছে। কিন্তু জ্বালানির অভাবে বেশিক্ষণ আর সেগুলিকে চালানো যাবে না। হাসপাতালের মর্গে শুধু লাশ আর লাশ। বিদ্যুৎ না থাকায় ফ্রিজার চালানো যাচ্ছে না। আস্তে আস্তে দুর্গন্ধে ভরে উঠতে শুরু করেছে হাসপাতাল চত্বর। ঠিকঠাক খাবার তো দূরের কথা, পর্যাপ্ত পানীয় জলের অভাব রয়েছে গাজায়।
শুধুমাত্র গরম রুটির জন্য শিশুরা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এই ছবি গোটা বিশ্বের সংবাদ মাধ্যমে আজ দেখা যাচ্ছে। বীভৎসতার এখানেই শেষ নয়। আইসক্রিম রাখার বক্সে শিশুদের মৃতদেহ রাখা হচ্ছে। তাই আবারও প্রশ্ন, এ কোথায় বাস করছি আমরা! ইজরায়েলের হুঙ্কার অব্যাহত। তাদের স্পষ্ট দাবি, প্যালেস্টাইনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস যে সমস্ত ইজরায়েল নাগরিকদের আটকে রেখেছে তাঁদের সবাইকে ছেড়ে না দেওয়া পর্যন্ত গাজাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হবে। বাইরের সাহায্য ঢুকতে দেওয়া হবে না সেখানে। সেই সঙ্গে আক্রমণ চালানো বন্ধ হবে না। অন্যদিকে হামাস গোষ্ঠীও ছাড়ার পাত্র নয়। তারাও আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের ইন্ধন দিচ্ছে ইরান, লেবানন। তাই তাদের ভূমিকা নিয়েও যথেষ্ট প্রশ্ন উঠছে। কেন তারা ইজরায়েলের মাটিতে হঠাৎই আক্রমণ চালিয়েছে, সেই জবাব চাইছে সবাই। যুযুধান দু’পক্ষ যুদ্ধ করবে, আর তার ফলে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ প্রাণ হারাবেন, এ কেমন কথা?
এই পরিস্থিতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যাচ্ছেন ইজরায়েল সফরে। যুদ্ধবিধস্ত গাজার মানুষ যাতে সাহায্য পান সেটা দেখবেন তিনি, এমনটাই শোনা যাচ্ছে। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গেও তাঁর বৈঠক হতে পারে। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বাইডেনের ইজরায়েল সফর নিঃসন্দেহে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল। কারণ এই যুদ্ধে প্রথমেই ইজরায়েলের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে আমেরিকা। তবে যে মৃত্যু মিছিল চলছে তা কীভাবে বন্ধ করা যায় সে ব্যাপারেও উদ্যোগ নিচ্ছে ওয়াশিংটন।
ইতিমধ্যেই ইজরায়েল বিরোধী দেশগুলির হুঙ্কার, অবিলম্বে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার করতে হবে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর। এই দাবি তুলে সরব হয়েছে স্পেন। পাল্টা হামাসের ভূমিকা নিয়েও বহু প্রশ্ন উঠছে। আর এই চাপানউতোরের মধ্যেই কেটে গিয়েছে দশটি দিন। যুদ্ধ থামার কোনও লক্ষণ নেই। মৃতের সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর মধ্যপ্রাচ্যের এই যুদ্ধ উদ্বেগ বাড়িয়েছে গোটা বিশ্বের। সবার একটাই প্রার্থনা, অবিলম্বে বন্ধ হোক এই প্রাণঘাতী যুদ্ধ। সেই ডাকে ইজরায়েল ও হামাস কবে সাড়া দেয়, এখন সেটাই দেখার।