ঢাকা: কোভিড ভ্যাকসিন উৎপাদনের ক্রমবর্দ্ধমাণ প্রতিযোগিতার আবহে ভারতের সঙ্গে ভ্যাকসিন সংক্রান্ত একটি নতুন চুক্তি স্বাক্ষর করল বাংলাদেশ। একইসঙ্গে ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষেত্রে ভারতে বিনিয়োগের কথাও ঘোষণা করল প্রতিবেশী দেশটি। চুক্তি অনুযায়ী ভারতের তৈরি ভ্যাকসিন প্রথমেই বাংলাদেশে সরবরাহ করবে ভারত। বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা বেক্সিমকো ফার্মা লিমিটেড ঘোষণা করেছে, তারা ভ্যাকসিনের উৎপাদনে জন্য আদর পুনাওয়ালার সিরাম ইন্ডিয়া লিমিটেডে (এসআইএল) এ বিনিয়োগ করতে চলেছে। বিনিয়োগের পরিমাণ কত সেবিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। তবে তা নির্ভর করছে বেক্সিমকো-কে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এসআইএল'র ভ্যাকসিন সরবরাহের প্রতিশ্রুতির উপর।
বিপিএলের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এসআইআইয়ের কাছ থেকে এই ভ্যাকসিন প্রাপক দেশগুলির মধ্যে বাংলাদেশের অগ্রাধিকার নিশ্চিত হওয়ার লক্ষ্যে এই চুক্তিটি তৈরি করা হয়েছে। এক্ষেত্রে তাদের বিনিয়োগ ভ্যাকসিনের অগ্রিম হিসাবে বিবেচনা করা হবে, বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে, চুক্তি অনুযায়ী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিনের সরবরাহ, বাংলাদেশ সরকারের প্রয়োজন অনুসারে ভ্যাকসিনের চাহিদা পূরণের দিকটি সুরক্ষিত রাখবে। বাংলাদেশ সরকার এবং সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার সম্মতিক্রমে নির্ধারিত দাম হলে তা কিছুটা কমও হবে। সরকারি ছাড়া বেসরকারী ক্ষেত্রে সরবরাহের জন্যেও অতিরিক্ত পরিমাণে ভ্যাকসিন সংরক্ষণ করতে পারবে বিপিএল।
বিপিএলের অধ্যক্ষ শায়ান এফ রহমান এনডিটিভিকে জানিয়েছেন যে “বেক্সিমকোর সঙ্গে এই চুক্তির ফলে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে একবার এই ভ্যাকসিন বিশ্বব্যাপী রেজিস্ট্রেশন পেলে বাংলাদেশ এই ভ্যাকসিন ব্যবহারকরী দেশগুলির মধ্যে প্রথম। তিনি আরও বলেন যে এই চুক্তি শুধুমাত্র সেরাম ইন্ডিয়া এবং বেক্সিমকোর মধ্যে সম্পর্কের গভীরতার লক্ষণ নয় বরং দু'দেশের মধ্যেও সম্পর্কের গভীরতার লক্ষণ।’’
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ শ্রিংলা ঢাকায় গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার প্রায় ১০ দিনের মধ্যেই, ২৮ শে আগস্ট দু'টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চুক্তি ঘোষিত হল। ভারতে ফেরার আগে ১৯ আগস্ট শ্রিংলা বলেছিলেন, বিশ্বের ৬০% ভ্যাকসিন তৈরি করে ভারত। তাই ভ্যাকসিন তৈরি হলে ভারতের নিকটতম প্রতিবেশী, বন্ধু, অংশীদার এবং অন্যান্য দেশগুলিও স্বাভাবিক ভাবেই এর অংশ হবে। এদিকে ভারতের সঙ্গে চুক্তি সংক্রান্ত ঘোষণার আগের দিন অর্থাৎ ২৭ আগস্ট, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ঘোষণা করেছিলেন, ইতিমধ্যেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন পাওয়ার আশায় চীনের সিনোভ্যাক বায়োটেক লিমিটেডের তৈরি ভ্যাকসিনের একটি বিলম্বিত পর্যায়ের ট্রালায়ে অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ। সেক্ষেত্রে বিপিএল ভ্যাকসিন তার একটি বিকল্প প্রস্তাব বলা যায়।