ওয়াশিংটন: সারাদিনের কাজকর্মের পর রাতের ঘুমটা খুবই জরুরি। আবার যাঁরা ‘নাইট ডিউটি করেন’ তাঁরা ঘুমটা পুষিয়ে নেন দিনের বেলায়। অর্থাৎ শরীর সুস্থ রাখতে ঘুম অত্যাবশ্যক। শুধু মানুষই নয়, গৃহপালিত এবং বন্যজন্তু প্রত্যেকেই নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমিয়ে নেয়। এর কারণ ঘুম না হলে মস্তিষ্ক বিশ্রাম পাবে না, ফলে তা ঠিকমতো কাজ করা বন্ধ করে দেবে। এখন, আমেরিকার এক গবেষণায় দেখা গেছে কৃত্রিম মস্তিষ্কেরও ঘুমের প্রয়োজন। মার্কিন মুলুকের লস আলামোস ল্যাবরেটরিতে এক পরীক্ষা চলাকালীন দেখা গেছে, কৃত্রিম বা যান্ত্রিক মস্তিষ্কেরও ঘুম বা বিশ্রামের দরকার।
এই গবেষণার প্রধান ওয়াইজিন ওয়াটকিন্স জানাচ্ছেন, তাঁরা স্পাইকিং নিউরাল নেটওয়ার্ক নিয়ে কাজ করছেন, যা আসল মস্তিষ্কের মতো করেই শিখতে পারে। মানুষ এবং অন্যান্য জৈবিক পদার্থ যেভাবে শৈশব থেকে চারপাশের পরিবেশ থেকে বোধ তৈরি করে, সেরকম করেই নিউরোফর্মিক প্রসেসরকে ট্রেনিং দিতে মহা উৎসাহে কাজ করছিলেন ওয়াটকিন্স ও তাঁর সহকর্মীরা। তাঁরা খেয়াল করেন, একটানা ট্রেনিং চলার পর প্রসেসরগুলিতে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ঘুমের মধ্যে মস্তিষ্ক যে অবস্থায় থাকে, কৃত্রিমভাবে অনেকটা সেরকম অবস্থার সংস্পর্শে আনা হয় প্রসেসরগুলিকে। এতে ফের স্থিতিশীলতা ফিরে পায় সেগুলি। ওয়াটকিন্স বলছেন, ‘এটা ঠিক যেন প্রসেসরগুলির বেশ ভাল একরাতের ঘুম দেওয়া।’
প্রথম দিকে কিছুতেই সমাধান মিলছিল না। নতুন তথ্যের সংস্পর্শে এলেই স্থিতিশীলতা হারিয়ে ফেলছিল প্রসেসর নেটওয়ার্কগুলি। কৃত্রিম ভাবে ঘুমের মতো পরিবেশ তৈরি করা ছিল সমস্যা সমাধানের শেষ উপায়। রেডিওতে চ্যানেল বদলানোর সময় হওয়া ঝিরঝির শব্দের মতো শব্দের সংস্পর্শে আনা হয় প্রসেসরগুলিকে। সবথেকে ভাল ফল পাওয়া যায় ‘গসিয়ান নয়েজ’ নামক এক শব্দের তরঙ্গদৈর্ঘ্য সৃষ্টি করে। গবেষক দল মনে করছে, ঘুমন্ত অবস্থায় জৈবিক নিউরোনগুলো যেমন সিগন্যাল পায়, এ তারই কাছাকাছি। এই দলের পরবর্তী উদ্দেশ্য, ইনটেলের লোইহি নিউরোমরফিক চিপে তাঁদের অ্যালগোরিদম বসানো। আশা করা হচ্ছে সময়মতো ‘ঘুম’ হলে, রেটিনা ক্যামেরার মাধ্যমে দেখা যে কোনও দৃশ্য থেকে তাৎক্ষণিক ভাবে জ্ঞান অর্জন করতে পারবে চিপটি।