ইল্যান্ড: টানা ১০ মাস শরীরে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব থাকার পরও শেষ পর্যন্ত জয়ী হলেন ব্রিটেনের ৭২ বছরের এক বৃদ্ধ। এত দিন করোনায় আক্রান্ত হয়েও মারণ ভাইরাসের সংক্রমণকে হারাতে সক্ষম হয়ছেন তিনি৷ তাঁর পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসতেই রোগমুক্তির জন্য দিনটি রীতিমতো শ্যাম্পেনের বোতল খুলে সেলিব্রেট করলেন তিনি। তবে এত বেশি দিন করোনায় আক্রান্ত থাকার ফলে সম্ভবত তিনিই বিশ্বরেকর্ডের অধিকারী৷
পশ্চিম ইংল্যান্ডের ব্রিস্টলেথর বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত ড্রাইভিং পরামর্শদাতা ডেভ স্মিথ গত ১০ মাসে ৪৩ বার করোনা পরীক্ষা করিয়েছেন৷ প্রতিবারই তাঁর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। ভুয়ো নয় সত্যি৷ ফলে সাতবার তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন৷ তাঁর শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছিল যে, প্রাণ নিয়ে বাড়ি ফেরার আশা একেবারেই ছেড়ে দিয়েছিলেন ডেভ স্মিথ। আত্মীয়স্বজনকে ডেকে নিজের শেষকৃত্য সম্পন্ন করার পরিকল্পনাও করতে শুরু করে দিয়েছিলেন। আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন স্বামীর সঙ্গে কোয়ারান্টাইনে থাকা তাঁর স্ত্রী লিন্ডাও। তিনি জানিয়েছেন, ‘এই ১০ মাসে অনেকবার মনে হয়েছে, ওর পক্ষে লড়াই করা সম্ভব হবে না। একটা ভীষণ খারাপ সময় কেটেছে।’
কিন্তু অবশেষে শেষরক্ষা হয়েছে। করোনা সংক্রমণমুক্ত হয়েছেন ডেভ। এখানেও রক্ষাকর্তা সেই অ্যান্টিবডি ককটেল৷ বায়োটেক সংস্থা রেগেনেরনের তৈরি সিন্থেটিক অ্যান্টিবডির ককটেলে প্রয়োগ করা হয় ওই বৃদ্ধের শরীরে। যদিও এই ওষুধ এখনও সেদেশের সরকার ব্যবহারের অনুমতি দেয়নি৷ তবুও ডেভের শারীরিক অবস্থার কথা মাথায় রেখে ক্ষেত্রে সরকারের তরফে নিয়ম শিথিল করা হয় এবং বিশেষ সম্মতি দেওয়া হয়েছিল। ওই ওষুধ দেওয়ার ৪৫ দিন পর তাঁর করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসে৷ উল্লেখ্য, প্রথমবার সংক্রমিত হওয়ার ৩০৫ দিন পর নেগেটিভ রিপোর্ট আসে৷ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বৃদ্ধ বলেন, ‘মনে হচ্ছে কেউ যেন আমাকে জীবনটা ফিরিয়ে দিল।’
এই ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে গবেষকরা বলছেন, তাঁরা এই বিষয়টি নিয়ে অবাক হয়ে গিয়েছেন৷ শুধু সংক্রমণ শরীরে ছিল তাই নয়, এই দীর্ঘ সময়ে বৃদ্ধের শরীরে ভীষণ সক্রিয় ছিল কোভিড ১৯৷