কিয়েভ: গোটা জীবন একসঙ্গে থাকার অঙ্গীকার করে দু’জনে হাতে হাতকড়া পরেছিলেন৷ ভ্যালেন্টাইন’স ডে-র দিন আলেকজান্দ্রা আর ভিক্টোরিয়া নামে এক প্রেমিক যুগল কোনও ভাবেই একজন অন্যজনকে ছেড়ে যাওয়া সম্ভব নয় বলে হাতকড়া পরেছিলেন৷ টানা ১২৩ দিন এভাবে থাকার পর দেশের জাতীয় সংবাদমাধ্যমে সকলের সামনে ১৭ জুন হাতকড়া কেটে ফেললেন তাঁরা৷
ইউক্রেনের খারকিভ শহরের বাসিন্দা আলেকজান্দ্রা কুদলে আর ভিক্টোরিয়া পুসতোভিতোভা আসলে ওই সময় সম্পর্কের ভাঙন রোধ করতে এবং নতুন করে গড়ার পরিকল্পনায় এই পথ বেছে নিয়েছিলেন৷ তাঁদের তখন মনে হয়েছিল, এভাবে থাকলে তো আর একে অপরের মধ্যে কিছুতেই ছাড়াছাড়ি হবে না৷ প্রতিটা কাজ একসঙ্গে করলে একে অপরের সঙ্গে জুড়ে থাকা যায়৷ বাজারে গিয়ে জিনিস কেনা, ধূমপান করা, জুতোর ফিতে বাঁধা থেকে শুরু করে সমস্ত কাজই একসঙ্গেই করতে হয়েছে৷ আর এটা করতে গিয়ে গত চার মাসে কিছু অস্বস্তিকর সত্যের মুখোমুখি হতে হয়েছে এই প্রমিক যুগলকে৷ কারও ব্যক্তিগত কোনও জীবন ছিল না ৷
২৯ বছরের ভিক্টোরিয়া জানান, ‘প্রতিটা মহিলার জীবনে একান্ত গোপন, নিজস্ব একটা জায়গা থাকে এবং সেটা থাকা প্রয়োজনও৷ এই সময় কোনও আলাদা গুরুত্ব পাইনি ওর থেকে৷ আমরা সারাক্ষণ একসঙ্গে ছিলাম বলে ও আমাকে ‘তোমায় মিস করছি’ এটা কোনও দিন বলেনি৷ কিন্তু সেটাই শুনতে চেয়েছিলাম সবসময়৷’ তবে এই চার মাস একসঙ্গে থাকায় বুঝতে পেরেছেন যে, তাঁরা দু’জনে সম্পূর্ণ ভিন্ন মনের মানুষ৷ ১২৩ দিন ভিক্টোরিয়ার জীবনের সবচেয়ে শান্ত সময় ছিল৷ গাড়ির সেলসম্যান ৩৩ বছরের আলেকজান্দ্রা বলেন, ‘আমাদের দু’জনের ওয়েভলেনথ একদম মেলে না৷’
তারপরও হাতকড়া কাটার পর চোখ ছলছল করছিল ভিক্টোরিয়ার৷ আর আলেকজান্দ্রা জনসমক্ষে প্রেমিকাকে বলেছেন, ‘আমরা যেভাবে চারটে মাস একসঙ্গে কাটিয়েছি, তাতে আমি খুশি, অনুশোচনা করার জায়গা নেই৷ ভবিষ্যতে একসঙ্গে না থাকতে না পারলেও আনন্দে থাকব৷’ নিজেদের হাতকড়া নিলামে বিক্রি করে যে অর্থ মিলবে, সেটা দান কের দেবেন৷ এখনও পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে কেউ এভাবে সম্পর্ক বাঁচানোর চেষ্টা করেনি, তাই তাঁরা স্থান পেয়েছেন ইউক্রেনের রেকর্ড বুকে ৷