নয়াদিল্লি: সমঝোতার পর থর এক্সপ্রেস বন্ধ করার ঘোষণা থেকে পিছু হটল পাক সরকার৷ রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে নিজেদের পুরানো অবস্থান থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত ইমরান প্রশাসনের৷ অবশেষে থর এক্সপ্রেস চলাচলে ছাড় দিতে বাধ্য হল পাকিস্তান৷
জানা গিয়েছে, ৬২ জন ভারতীয় ও ১০৩ জন পাক যাত্রী নিয়ে থর এক্সপ্রেস রওনা হওয়ার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে জিরো পয়েন্টে৷ আপাতত পাক সীমান্তের মুনাবাও স্টেশনে দাঁড়িয়ে থর এক্সপ্রেস৷ ৫টা ৪০ নাগাদ থর এক্সপ্রেস মুনাবাও স্টেশনে পৌঁছে গিয়েছে৷ সেখান থেকে ভারতের মাটিতে পা রাখবে ট্রেন৷ শুক্রবার যোধপুর-করাচি রুটে চলা থর এক্সপ্রেস বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান সরকার৷ পাকিস্তানের এই সিদ্ধান্তকে কড়া সমালোচনা করেছে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক৷ পরে, আন্তর্জাতিক মঞ্চে মুখ পোড়ানোর পর অবশেষে থর চালানোর ছাড়পত্র দেয় পাক সরকার৷
বৃহস্পতিবার ওয়াঘা সীমান্তে সমঝোতা এক্সপ্রেস আটকে দেয় ইসলামাবাদ৷ ভারতে ঢুকতে পাক চালকের ভয়ের কারণ দেখিয়ে স্থগিত রাখা হয় সমঝোতা এক্সপ্রেসের যাত্রা৷ মাঝপথে সমঝোতা এক্সপ্রেস থেমে যাওয়ার শুরু হয় বিতর্ক৷ পরে, ভারতীয় ইঞ্জিন চেয়ে পাঠায় পাকিস্তান৷ পাকিস্তানের বার্তা পেয়ে ছুটে যায় ভারতীয় ইঞ্জিন৷ পাকিস্তানের ওয়াখা সীমান্ত থেকে সমঝোতা এক্সপ্রেসকে ভারতে নিয়ে আসে৷ এদিন বিকাল পাঁচটা নাগাদ আর্টারি বর্ডারে ট্রেনটি নিয়ে আসা হয়৷ ওই ট্রেনে ছিলেন ১১০ জন যাত্রী৷ তবে, সমঝোতা এক্সপ্রেস ফিরলেও থর এক্সপ্রেস বন্ধ করার পাকিস্তানের ঘোষণায় নতুন করে তৈরি হয় বিতর্ক৷ পাক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ভারত এখনও চাই, আলোচনা করে বিষয়টি মিটিয়ে নিতে৷ আমাদের অনুরোধ, পাকিস্তান তাদের সিদ্ধান্ত বিবেচনা করুক৷
Thar Express train carrying 62 Indian and 103 Pakistani passengers started from Zero Point station (in Pakistan, near International Border) at 1720 hours and reached India’s Munabao Station at 1740 hours, today.
— ANI (@ANI) August 10, 2019
চিন, অামেরিকা, রাষ্ট্রসংঘের পর এবার রাশিয়া৷ কাশ্মীর ইস্যুতে আরও কোণঠাসা পাকিস্তান৷ আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপে ব্যর্থ ইসলামাবাদ৷ কাশ্মির নিয়ে ভারতের পাশেই দাঁড়াল রাশিয়া৷ রাশিয়াতেও পাকিস্তানের কূটনৈতিক ব্যর্থতা৷
সংবিধান মেনেই ধারা বিলোপ ও কাশ্মীর ভাগ হয়েছে৷ বিবৃতি দিয়ে জানালো রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রক৷ জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রসংঘ৷ ভারত-পাক সংঘাতের পরিস্থিতি নিয়ে ভারতকে সিমলা চুক্তির কথা মনে করিয়ে প্রতিক্রিয়া রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতারেসের৷ সিমলা চুক্তির উল্লেখ করে রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র জানিয়েছেন, উপত্যকায় ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের পথে না গিয়ে সংযত থাকুক৷ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিমলা চুক্তিতে কাশ্মীর সমস্যা দ্বিপাক্ষিক বলে উল্লেখ করেছেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র৷
ইতিমধ্যেই জম্মু ও কাশ্মীরে সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করছে কেন্দ্র৷ জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন বিল এনে লাদাখ ও কাশ্মীরকে ২টি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়েছে৷ ভারতের এই সিদ্ধান্তকে একতরফা ও অবৈধ বলে রাষ্ট্রসংঘে অভিযোগ জানিয়েছে পাকিস্তান৷ আজ, সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই প্রতিক্রিয়া দিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ৷
কাশ্মীর ইস্যুতে রাষ্ট্রসংঘের হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা খারিজ করে রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র জানিয়েছেন, সিমলা চুক্তি অনুযায়ী কাশ্মীর ইস্যুটি ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বিষয়৷ এই চুক্তিতে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা করার কোনও নির্দেশ নেই৷ শান্তিপূর্ণভাবে কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের কথা ওই চুক্তিতে বলা হয়েছে৷ ১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তিতে কাশ্মীরকে দ্বিপাক্ষিক বিষয় বলেই মেনে নিয়েছিল ভারত ও পাকিস্তান৷ সেই চুক্তি ও লাহৌর ঘোষণাপত্রই আলোচনার ভিত্তি হওয়া উচিত বলে মনে করে ভারত৷