জেনেভা: কিছুদিন আগেও লকডাউন ছিল চিনে। করোনা পরিস্থিতি খারাপের দিকে না গেলেও সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিরোধিতা বাড়ছিল। তারই মধ্যে আচমকা হু হু করে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে দেশে। সম্প্রতি পরিস্থিতি এমন হয় যে চিনের অনেক হাসপাতালে বেড তো দূর, কোভিড রোগীর মাটিতেও জায়গা হচ্ছিল না। কিছু কিছু রোগীকে সরাসরি শ্মশানে নিয়ে গিয়ে রাখা হচ্ছিল! এরই মাঝে অভিযোগ যে, চিন সঠিক কোভিড তথ্য দিচ্ছে না। এই নিয়ে এবার কড়া নির্দেশ আসল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে।
আরও পড়ুন- ডনেৎস্কে প্রত্যাঘাত, ইউক্রেন সেনার গোলায় বর্ষণে গুরুতর জখম রাশিয়ার প্রাক্তন উপপ্রধানমন্ত্রী!
দেশের বর্তমান কোভিড পরিস্থিতি সম্পর্কে চিনের থেকে বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। চিনা আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করে তাদের থেকে ‘আসল’ তথ্য জানতে চেয়েছে তাঁরা। বলা হয়েছে, একমাত্র সঠিক তথ্য পেলেই অন্য দেশগুলিও কোভিড মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে পারবে। তাই চিন যাতে কোনও ভাবে করোনা তথ্য না লুকিয়ে চলে সেই আর্জি জানান হয়েছে। আসলে লাগাতার কিছু দিন ধরে অভিযোগ উঠেছে যে, সংক্রমণ হোক কিংবা মৃত্যুর সংখ্যা, কোভিড নিয়ে ‘প্রকৃত’ তথ্য দিচ্ছে না চিন। তাই এবার আসলে নামল খোদ ‘হু’।
কিন্তু ঠিক কী কী বিষয় জানতে চায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা? জানা গিয়েছে, দৈনিক কোভিডে আক্রান্তের সংখ্যা, মৃতের সংখ্যা, দৈনিক টিকাকরণের পরিমাণ, হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা, কতজন ছাড়া পেল, কতজন আশঙ্কাজনক, এই সমস্ত তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই চিন সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিভৃতবাসের মতো কড়াকড়ি বন্ধ করার। জানান হয়েছে, বিদেশ থেকে আসা পর্যটকদের যে কোভিড পরীক্ষা এবং ৭ দিন নিভৃতে থাকার নিয়ম, তাও বন্ধ হতে চলেছে।
আসলে সম্প্রতি চিনের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছিল। এই ইনস্টিটিউটগুলিতে পড়াশোনা হয় শুধুমাত্র চিনা ভাষায়। বিশ্বের একাধিক দেশে এই প্রতিষ্ঠান থাকলেও সবথেকে বেশি রয়েছে ব্রিটেনেই। চিনের দাবি, নিজেদের ভাষা, শিল্পকলা এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রসারের উদ্দেশ্যেই গড়ে তোলা হয়েছে কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটগুলি। কিন্তু সমালোচকদের বক্তব্য, বিভিন্ন দেশে চিন সরকারের প্রচার করে এই প্রতিষ্ঠান। আরও বড় দাবি, দেশের অতিমারি পরিস্থিতির ‘আসল তথ্য’ ধামাচাপা দেওয়ার কাজও করে এই শিক্ষা সংস্থা। তাই এখন যখন আবার চিনের কোভিড পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে, আশঙ্কা অতিমারির এই ভয়াবহতাকে আবার ছোট করে দেখানোর চেষ্টা করবে এই কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট। ইতিমধ্যেই তথ্য লোকানোর যে অভিযোগ উঠেছে তাতেই নড়েচড়ে বসেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।