নাগাসাকি: জামাকাপড় পড়লেই হাঁপিয়ে ওঠেন। আধুনিক নগর-জীবনের চালচলনের সঙ্গে একেবারেই মানিয়ে নিতে পারেন না। আর তাই নগ্ন অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে নগর জীবন থেকে দূরে একটি নির্জন দ্বীপেই জীবন কাটাচ্ছেন ম্যাসাফুমি নাগাসাকি নামের এক ৮৭ বছর বয়সী ফটোগ্রাফার। জানা যাচ্ছে প্রায় তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে জাপানের বাসিন্দা এই বৃদ্ধ কোনও পোশাক পরেন না। বয়স যখন ৫০ পেরিয়েছে সেই সময় থেকেই নগর জীবনের চালচলন থেকে সম্পূর্ণ দূরে সরিয়ে নিয়ে নির্জন একটি দ্বীপে বসবাস করা শুরু করেছেন। এইভাবেই কেটে গিয়েছে জীবনের ২৯ টা বছর। বৃদ্ধ এই ফটোগ্রাফারের এখন একটাই সঙ্গী, প্রকৃতি।
জাপানের একটি সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, প্রথম জীবনে একজন জনপ্রিয় ফটোগ্রাফার ছিলেন এই বৃদ্ধ। ছবি তুলেই জীবনের একটা বড় অংশ কাটিয়েছেন। কিন্তু ক্রমে নগর জীবনের চালচলন এবং আদব কায়দার প্রতি বিতৃষ্ণা জন্মাচ্ছিল। আর তাই আজ থেকে প্রায় ঊনত্রিশ বছর আগে সবকিছু ছেড়েছুড়ে দিয়ে শহরের কোলাহল থেকে দূরে সরে গিয়ে নির্জন জায়গায় বসবাসের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কাউকে কিছু না জানিয়েই চলে যান সোতোবানারিতে। প্রসঙ্গত এটি জাপানের দক্ষিণে তাইওয়ানের কাছে অবস্থিত একটি নির্জন দ্বীপ। বলতে গেলে জনবসতি প্রায় নেই। আর মূলত সেই কারণেই এই দ্বীপে গিয়ে বসবাস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন জাপানের এই ব্যক্তি। সেখানেই সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে প্রায় তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে বসবাস করছেন তিনি।
তবে সম্প্রতি ওই নির্জন দ্বীপে একাকী জীবনযাপনে ছেদ পড়েছে তার। ২০১৮ সালে এই বৃদ্ধকে ওই দ্বীপ থেকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় জেলেরা। এরপরেই শুরু হয় করোনার দাপট। সবে মিলে প্রকৃতির কাছে আর ফিরে যেতে পারেননি বরং অতিমারিতে ঘরবন্দী হয়ে কেটেছে জীবন। কিন্তু সম্প্রতি ছুট পেতেই ফের প্রকৃতির কোলে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তবে ইতিমধ্যেই জাপানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের দৌলাতে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন মাফাসুমি। তার জীবনের উপর একটি তথ্যচিত্র তৈরি করার আবদারও করেছেন অনেকে। যদিও তাতে না করেনি তিনি। সম্প্রতি সেই তথ্যচিত্রই আবার ইউটিউবে আপলোড করা হয়েছে। আর তাতেই এখন জগৎজোড়া নাম মাফাসুমির। জাপান তো বটেই জাপানের বাইরে বহু দেশের মানুষই ওই ভিডিওর সুবাদে আজ মাফাসুমিকে এক ডাকে চেনেন।