প্যারিস: গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবারই প্রকাশ্যে আসে বিশ্বের প্রবীণতম নাগরিক জাপানের ১১৯ বছরের বৃদ্ধা কানে টানাকা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। জানা যায় গত সপ্তাহেই বিশ্ববাসী হারিয়েছে বিশ্বের সব থেকে বয়স্ক এই মহিলাকে। কিন্তু এখন প্রশ্ন হল টানাকার মৃত্যুর পরে এখন কে বিশ্বের সবথেকে প্রবীণতম নাগরিক? জানা যাচ্ছে, টানাকার থেকে মাত্র এক বছর ৭৩ দিনের ছোট ফ্রান্সের নাগরিক বোন আন্দ্রের নাম সোমবার বিশ্বের প্রবীণতম নাগরিক হিসেবে নথিভূক্ত হয়েছে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের পাতায়।
এতদিন পর্যন্ত বোন আন্দ্রে নামের এই ফরাসি সন্ন্যাসিনী ছিলেন বিশ্বের দ্বিতীয় প্রবীণতম নাগরিক। তিনি আবার ইউরোপের সবচেয়ে বয়স্ক মহিলাও বটে। এই মুহূর্তে তাঁর বয়স ১১৮ বছর ৭৩ দিন। তিনি যখন ১১৭ বছর বয়সে পদার্পণ করেন তখনই তাঁকে ইউরোপের সবচেয়ে প্রবীণতম নাগরিকের খেতাব দেওয়া হয়। কিন্তু গত শুক্রবার কানে টানাকার মৃত্যুর পর এই বোন আন্দ্রেই পেলেন বিশ্বের পরবর্তী প্রবীণতম নাগরিকদের খেতাব।
জানা যাচ্ছে, আন্দ্রের জন্ম ১৯০৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি। তবে জন্মের সময় তাঁর নাম ছিল লুসিল য়ান্ডম। তিনি প্রথম থেকেই ফ্রান্সের একটি সন্ন্যাসী স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। পরবর্তীতে সেই স্কুলের শিশুদেরই দেখাশোনার দায়িত্ব বর্তায় তাঁর উপর। ১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি সন্ন্যাস ধর্ম গ্রহণ করেন এবং তাঁর নাম হয় বোন আন্দ্রে। তবে বিশ্বের প্রবীণতম নাগরিক ছাড়াও আরও একটি খেতাব অর্জন করেছেন এই মহিলা। জানা যাচ্ছে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ছাড়াও বিশ্বের সবথেকে বড় এবং ভয়াবহ দুটি মহামারী ১৯১৮ সালের স্প্যানিশ ফ্লু, এবং ২০২১ সালের করোনার সময়ও সম্পূর্ণ নীরোগ এবং সুস্থ ছিলেন এই মহিলা। গত বছর তাঁকে এই বিষয়ে একটি বিশেষ উপাধি দিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান। যদিও এই প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য ছিল, ‘আমি নিজেও বুঝতে পারিনি আমাকে কি খেতাব দেওয়া হল।’
এই মুহূর্তে সিস্টার আন্দ্রে একটি নার্সিংহোমে বসবাস করছেন। এই নার্সিংহোমে তিনি প্রায় ১২ বছর ধরে রয়েছেন। তবে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বয়স্ক নাগরিকের খেতাব রয়েছে জিন লুইস ক্যালমেন্ট নামে এক ফরাসি মহিলার কাছে। যিনি ১২২ বছর এবং ১৬৪ দিন বেঁচে ছিলেন। আন্দ্রের ইচ্ছে, তিনি জিন লুইসের এই সর্বকালের রেকর্ড ভাঙতে চান। সেই সঙ্গে জিনের সঙ্গে তাঁর একটি বিশেষ মিল রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বিশ্বের প্রবীণতম নাগরিক জিন লুইসের সবচেয়ে প্রিয় খাবার ছিল ওয়াইন এবং সঙ্গে চকলেট। একইভাবে সিস্টার আন্দ্রেও এই দুটি জিনিস খেতে ভালোবাসেন।
অন্যদিকে জানা যাচ্ছে বিশ্বের প্রবীণতম নাগরিকের স্বীকৃতি পাওয়ার পরেই সিস্টার আন্দ্রেকে শুভেচ্ছাবার্তা জানিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। সেইসঙ্গে তাঁকে একটি চিঠি দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ফ্রান্সের সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোও।