বন্দরে জ্বালানি বোঝাই জাহাজ, অর্থের অভাবে ফিরিয়ে দিল শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

বন্দরে জ্বালানি বোঝাই জাহাজ, অর্থের অভাবে ফিরিয়ে দিল শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

কলম্বো: লঙ্কার অর্থনৈতিক সঙ্কট চরম অবস্থায় পৌঁচেছে। বন্দরে দাঁড়িয়ে রয়েছে জ্বালানী বোঝাই জাহাজ। কিন্তু সেগুলো কেনার মতো ক্ষমতা শ্রীলঙ্কার সরকারের নেই। বুধবারই শ্রীলঙ্কার তরফে দেশবাসীকে জানানো হয়েছে, তাঁরা যেন জ্বালানী কেনার জন্য লাইন না দেন। কারণ জ্বালানী কেনার পর্যাপ্ত ডলার শ্রীলঙ্কা সরকারের নেই। 

শক্তিমন্ত্রী কাঞ্চনা উইচশেকরা জানিয়েছেন, শ্রীলঙ্কার জলসীমাতে একটি জাহাজ পেট্রোল নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু সেই পেট্রোল কেনার ক্ষমতা শ্রীলঙ্কা সরকারের নেই। শ্রীলঙ্কার কাছে পেট্রোল কেনার জন্য পর্যাপ্ত ডলার নেই। বৃহস্পতিবারের মধ্যেই সেই জাহাজ ছেড়ে দেওয়া হবে। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, বেশ কিছু সরবরাহকারীর কাছে ৫.৩ কোটি মার্কিন ডলার বকেয়া রয়েছে। এর আগে যে গ্যাসলিন ব্যবহার করা হয়েছিল, সেই  অর্থ সংস্থাকে দেওয়া হয়নি। সরকারের কাছে বর্তমানে বিদেশি মুদ্রা না থাকায়, সেই বকেয়া অর্থ মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। 
করোনার জেরে শ্রীলঙ্কার পর্যটন শিল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে। পাশাপাশি শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সঙ্কট বাড়াবাড়ি আকার ধারণ করেছে। ১৯৪৮ সালে শ্রীলঙ্কা স্বাধীনতা পায়। তারপর থেকে এই ধরনের অর্থনৈতিক সঙ্কট হয়নি। দেশে নিত্য প্রয়জোনীয় পণ্যের মূল্য ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আকাল দেখা দিয়েছে খাদ্যদ্রব্যের। পাশাপাশি ওষুধের ক্ষেত্রে আকাল দেখা দিয়েছে. চিকিৎসা পরিষেবা ব্যহত হয়েছে। জ্বালানীর অভাব দেখা দিয়েছে। স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে শ্রীলঙ্কা। 

শ্রীলঙ্কার পরিবার দেশের এই সঙ্কটের জন্য রাজাপক্ষে পরিবারকে দায়ী করছেন। প্রসঙ্গত, রবিবার থেকে শ্রীলঙ্কার বিক্ষোভ হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। রবিবার প্রথমে এক সাংসদ শ্রীলঙ্কায় বিক্ষোভকারীদের গুলি চালানোর নির্দেশ দেয়। পরে উত্তেজিত জনতা তাঁকে ঘিরে ফেলেন। তিনি একটি বহুতলে আশ্রয় নেন। সেখান থেকেই তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনার পর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে শ্রীলঙ্কা। বিক্ষোভের জেরে শ্রীলঙ্কায় আট জনের মৃত্যু হয়। তিন শতাধিক মানুষ আহত হন। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মহিন্দা রাজাপক্ষে পদত্যাগ করেন। 
বিক্ষুব্ধ জনগণ মহিন্দা রাজাপক্ষের পৈতৃক ভিটাতে আগুন ধরিয়ে দেন। মঙ্গলবার ভোরে উত্তেজিত জনতা শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনের সামনে জড়ো হন। যদিও তার আগেই শ্রীলঙ্কার বিশাল সেনাবাহিনী রাজাপক্ষের পরিবারকে নিয়ে যান। কলম্বোর নৌবাহিনীর ঘাঁটিতে লুকিয়ে রাখা হয় বলে জানা গিয়েছে। যদিও গুজব উঠতে থাকে, মহিন্দা রাজাপাক্ষে ভারতে পালিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়, তিনি পালিয়ে যাননি। তাঁকে নিরাপত্তার খাতিয়ে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু কোথায় লুকিয়ে রাখা হয়েছে, তা সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়নি। অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কার আদালত মহিন্দা রাজাপক্ষে, তাঁর ছেলে সহ ১৫ জনের দেশ ছাড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

 
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *