ইউক্রেনের জনবহুল শপিংমলে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, বহু সাধারণ মানুষের হতাহতের আশঙ্কা

ইউক্রেনের জনবহুল শপিংমলে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, বহু সাধারণ মানুষের হতাহতের আশঙ্কা

পোলতাভা: দেখতে দেখতে ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যেকার সংঘাত পঞ্চম মাসে পদার্পণ করেছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বিশেষ সামরিক অভিযানের নামে যে হামলা শুরু করেছিল রুশ বাহিনী তা আজও অব্যাহত। ইতিমধ্যেই বিশ্বের বহু দেশ এই দুই দেশের মধ্যে মধ্যস্থতা করানোর চেষ্টা করেছেন একাধিকবার। কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হয়নি। রাশিয়ার হামলায় মুহূর্তের মধ্যে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে ইউক্রেনের একের পর এক সুন্দর এবং গুরুত্বপূর্ণ শহর। কিন্তু তাতেও এই যুদ্ধ যেন কিছুতেই থামার নাম নিচ্ছে না। এহেন পরিস্থিতিতে সোমবার ইউক্রেনের একটি শপিং মলের মিসাইল হামলা চালাল রাশিয়া। জানা যাচ্ছে ইউক্রেনের পোলতাভা অঞ্চলের ক্রিমেনচুকের ওই শপিংমলে যখন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয় তখন মলের ভিতর বহু সাধারণ মানুষ ছিলেন। এই হামলার পরপরই খবর মেলে যে, এই মিসাইল হামলায় ঘটনাস্থলেই ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩৪ জন। কিন্তু সোমবার রাতের মধ্যেই মৃতের সংখ্যা হুহু করে বাড়তে থাকে। শেষ পাওয়া খবরে অনুযায়ী জানা যাচ্ছে এই মিসাইল হামলায় অন্ততপক্ষে ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে আহতদের মধ্যে অনেকেরই আঘাত গুরুতর হওয়ায় মৃতের সংখ্যা পরবর্তীতে আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা।

 স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার যে শপিং মলটির উপর রাশিয়ার সেনাবাহিনীর হামলা চালিয়েছে সেই মল থেকে রাশিয়া সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত এলাকা প্রায় ৮১ মাইল দূরে। ফলে সাধারণ জনমানব বিশিষ্ট ওই শপিং মলে কেন হামলা চালাল রুশ বাহিনী সেই নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় রাষ্ট্রসঙ্ঘের মুখপাত্র স্টেফান দুজারিজ এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন। অন্যদিকে পোলতাভা অঞ্চলের প্রশাসনিক প্রধান দিমিত্র লুলিন এই হামলাকে যুদ্ধাপরাধ বলে বর্ণনা করেছেন। তাঁর দাবি, এই শহরটিতে বেশ কয়েকটি তেল শোধনাগার এবং আরও অনেক জায়গায় ইতিমধ্যেই রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। শহরে প্রায় ২ লক্ষ ২০ হাজার বেসামরিক লোকের বাস। কিন্তু তার মধ্যেই যেভাবে একের পর এক মিসাইল হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া বাহিনী তাতে এই শহরের সাধারণ মানুষের জীবন ক্রমাগত বিপন্ন হচ্ছে।

উল্লেখ্য গত ২৪ শে ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করেছে রুশ ফৌজ। যতদিন এগিয়েছে ততই আরও জোরালো হয়েছে রাশিয়ার হামলা। অন্যদিকে একের পর এক রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইতিমধ্যেই ইউক্রেনের কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। গৃহহীন হয়ে প্রতিবেশী দেশে উদ্বাস্তু শিবিরে রাত কাটাচ্ছেন কয়েক লক্ষ মানুষ। কিন্তু তারপরেও যুদ্ধ থামার নাম নেই, উল্টে যত দিন গড়াচ্ছে তত ক্রমেই শক্তিশালী হচ্ছে রুশ সেনার অবস্থান। ইতিমধ্যেই মারিওপোলের পরে আরেকটি বড় শহর সেভেরদোনেৎস্ক দখল করে নিয়েছে রাশিয়া। এই শহরকে কার্যত রুশ বাহিনীর হাতে তুলে দিয়ে সেনা সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছে ইউক্রেন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *