ফের পরমাণু যুদ্ধের হুঁশিয়ারি পুতিনের, হিরোশিমা-নাগাসাকির প্রসঙ্গ কেন তুললেন রুশ প্রেসিডেন্ট?

ফের পরমাণু যুদ্ধের হুঁশিয়ারি পুতিনের, হিরোশিমা-নাগাসাকির প্রসঙ্গ কেন তুললেন রুশ প্রেসিডেন্ট?

নিজস্ব প্রতিনিধি: পরমাণু বোমার হানায় জাপানের দুই শহর হিরোশিমা এবং নাগাসাকি নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। মৃত্যু হয় কয়েক লক্ষ মানুষের। আর যারা বেঁচে গিয়েছিলেন তাঁদের হাজারো শারীরিক সমস্যা নিয়ে গোটা জীবন অতিবাহিত করতে হয়। এখনও সেই দুঃস্বপ্নের স্মৃতি তাড়া করে বেড়ায় শহরদুটিকে। আর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে নতুন করে সেই প্রসঙ্গ তুলে আনলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আট মাস পেরিয়ে গিয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ থামছে না। এই অবস্থায় গোটা বিশ্বের উদ্বেগ নতুন করে বাড়ালেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

তিনি বলেছেন, হিরোশিমা ও নাগাসাকির বিরুদ্ধে হামলা করে যেভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ লড়া হয়েছিল, সেভাবেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ হতে পারে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোর সঙ্গে আলোচনায় পুতিন এমন কথা বলেছেন বলে খবর। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি নিয়ে ইউরোপের রাষ্ট্রনেতারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। সবারই আশঙ্কা, এবার হয়ত ইউক্রেনে পরমাণু হামলা চালাবে রাশিয়া। উল্লেখ্য পুতিন বলেছেন, “হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পরমাণু বোমা ফেলার পর জাপান বাধ্য হয়েছিল আত্মসমর্পণ করতে। এই হামলার পরে শেষ হয়েছিল দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা বিশ্বযুদ্ধ। বড় শহরগুলিতে হামলা করলেই যুদ্ধে জেতা যায় না। তাই একটু ছোট শহরকে গুঁড়িয়ে দিয়েও যুদ্ধ শেষ করা যায়।” আর রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের এই বক্তব্যের পরেই অসম্ভব উদ্বেগ বেড়েছে আন্তর্জাতিক মহলের। তবে কি ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ নয়, অন্য কোনও ছোট শহরকে টার্গেট করতে চলেছে রাশিয়া? এই আশঙ্কা করছেন সবাই।

আসলে রাশিয়া যত সহজে ইউক্রেনকে কব্জা করতে পারবে বলে ভাবা হয়েছিল, বাস্তবে তা হয়নি। নিজেদের মতো করে রাশিয়াকে পাল্টা কাউন্টার করে চলেছে ইউক্রেন। সবচেয়ে বড় কথা রাশিয়ার ৭০ রাজার সৈন্য এই যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন বলে দাবি করছে। সেই সঙ্গে রাশিয়ার বহু যুদ্ধবিমান, ট্যাঙ্ক ইউক্রেন ধ্বংস করেছে। ইউক্রেনের যেমন হাজার হাজার সেনা এবং সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে, উল্টোদিকে রাশিয়ারও ক্ষতি কম কিছু হয়নি। সবচেয়ে বড় কথা যুদ্ধের পরিসমাপ্তি চেয়ে পুতিনের বিরুদ্ধে রাজধানী মস্কোয় মিছিল পর্যন্ত বেরিয়েছে। বহু মানুষ রাস্তায় নেমে যুদ্ধ ইস্যুতে পুতিনের বিরোধিতা করেছেন। যে ঘটনা একেবারেই খুশি করেনি পুতিনকে। প্রতিবাদীদের জেলে পর্যন্ত পুড়ে দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য চাপ দিচ্ছে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ। এই পরিস্থিতিতে পুতিন চাইছেন এমন কিছু করতে যাতে যুদ্ধ দ্রুত শেষ হয়ে যায়। তবে কি সেই লক্ষ্যেই তিনি এবার পরমাণু হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন? এই আশঙ্কা স্বাভাবিকভাবেই করছেন সবাই। তাই রুশ প্রেসিডেন্টের মুখে যেভাবে হিরোশিমা এবং নাগাসাকির কথা শোনা গিয়েছে তা উদ্বেগ বাড়িয়েছে গোটা বিশ্বের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 − three =