যুদ্ধ বিরোধী রাশিয়ান জনতাকে জেলে ভরছেন পুতিন! ‘কোড’ ভিত্তিক চালু প্রতিবাদ

যুদ্ধ বিরোধী রাশিয়ান জনতাকে জেলে ভরছেন পুতিন! ‘কোড’ ভিত্তিক চালু প্রতিবাদ

মস্কো: ২০ দিন হয়ে গেল যুদ্ধের কোনও বিরাম নেই। কার্যত একদিনের ঘোষণায় ইউক্রেনে হামলা চালিয়েছিল রাশিয়ান বাহিনী। যদিও হামলা যে করা হবে তা কয়েকদিন আগে থেকেই বোঝা যাচ্ছিল বটে। কিন্তু সিদ্ধান্ত নিয়ে বেশি সময় দেননি রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। যুদ্ধ হবে এটা বুঝতে পেরে রাশিয়ার আম জনতার একটা বড় অংশ প্রতিবাদে নামছিল। কিন্তু ততদিনে অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছিল। ইউক্রেনে হামলা শুরু করে দিয়েছিল রাশিয়ার সেনা। তা বলে কি প্রতিবাদ থেমে ছিল? না। এখনই থেমে নেই। অনেক প্রতিবাদী রাশিয়ান জনতার ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে পুতিন সরকার। কিন্তু যুদ্ধ বিরোধিতা থেমে নেই।

আরও পড়ুন- দুই জনপ্রতিনিধি খুন, সিবিআই তদন্ত চেয়ে মামলার আবেদন

২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। তার আগে পর্যন্ত রাশিয়ার অন্দরের চিত্রটা এক রকম ছিল। যুদ্ধের আবহ তৈরি হওয়ায় প্রতিবাদ হচ্ছিল। কিন্তু হামলা হওয়ার ঠিক পর থেকে আমূল পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে খোদ হামলাকারী দেশেই। যে সমস্ত রাশিয়ান নাগরিক এই যুদ্ধের বিরোধিতা করছে তাদের বেছে বেছে ঢোকানো হচ্ছে জেলে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার মানুষকে শ্রীঘরে পাঠিয়েছে পুতিন সরকার। তাদের ‘অপরাধ’ রুশ আগ্রাসনের বিরোধিতা করা। তবে এই গ্রেফতারি বা নজরদারি করেও প্রতিবাদ আটকানো যাচ্ছে না রাশিয়ার শান্তিপ্রিয় মানুষদের। সরাসরি কিছু না করতে পারলেও ইঙ্গিতবাহী চিহ্ন, কোড, পোস্টার দিয়ে প্রতিবাদ জারি রাখছে তারা। এমন ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে যা দেখে নিতান্তই সাধারণ মনে হলেও তার মধ্যে রয়েছে অন্য, ভিন্ন অর্থ।

ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে একটি পোস্টার বা ছবি যেখানে দেখা যাচ্ছে বহু মানুষের হেঁটে যাচ্ছে। তবে তাদের মাঝে একটা মুখ আঁকা রয়েছে, আর আছে ৭ সংখ্যা। অনেকেই মনে করছেন, সাধারণভাবে এটি একটি মামুলি পোস্টার হলেও এর মধ্যে থেকে কিছু সঙ্কেত দিচ্ছেন প্রতিবাদীরা। হয়তো মাসের ৭ তারিখ কোনও পদযাত্রা বা কোনও গণ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে। তবে শুধু এই পোস্টার নয়, একই রকম আরও অনেক পোস্টার বা ব্যানার ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে রাশিয়া জুড়ে। এইসব ছাড়াও বিভিন্ন কোড এবং সঙ্কেত ব্যবহার করা হচ্ছে যাতে প্রতিবাদ কখনও বন্ধ না হয়ে যেতে পারে। হাতিয়ার করা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়াকেও।

আরও পড়ুন- শখ বড় বালাই! স্রেফ চাঁদা তুলে আস্ত একটা দ্বীপ কিনলেন দুই বন্ধু

সূত্রে মারফৎ জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত রাশিয়ার ৫৩টি শহর থেকে প্রায় ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষকে প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু তবুও যুদ্ধ বিরোধী প্রতিবাদ বা আন্দোলন দমাতে পারছে না ক্রেমলিন। প্রতিবাদ আটকাতেই হয়তো নেটমাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে পুতিন বাহিনী। রাশিয়া জুড়েই এই সমস্যায় পড়েছে আন্দোলনকারীরা। কিন্তু রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করতে ভয় পাচ্ছে না তারা। পদে পদে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে, লেলিনের দেশ যুদ্ধ চায় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − 2 =