ঋণের ভারে জর্জরিত পাকিস্তান, টাকা বাঁচাতে আজব সিদ্ধান্ত সেনা কর্তৃপক্ষ

ঋণের ভারে জর্জরিত পাকিস্তান, টাকা বাঁচাতে আজব সিদ্ধান্ত সেনা কর্তৃপক্ষ

করাচি: তীব্র আর্থিক সমস্যার শিকার পাকিস্তান। তারওপর পাকিস্তানের মাথার ওপর ঝুলছে বিপুল পরিমাণ ঋণের বোঝা। এই পরিস্থিতির জন্যে কি পূর্বতন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দায়ী? বর্তমানে পাকিস্তান এনিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর চলছে। ইমরান অবশ্য তাঁর আমলে আদিবাসী এলাকাগুলির উন্নয়নের খতিয়ান পেশ করেছেন। অন্যদিকে, খরচ কমাতে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। ২০২২-২০২৩ সালের প্রতিরক্ষা বাজেটে পাক সেনাবাহিনীর খাতে খরচ কমানো হয়েছে গত আর্থিক বছরের তুলনায়।

পাকিস্তান তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কটের শিকার। পাক সরকারের মাথার ওপর এখন বিপুল পরিমাণ ঋণের বোঝা। এব্যাপারে পাক সরকার জানিয়েছে, বর্তমানে পাকিস্তানের মোট ঋণের পরিমাণ ৮৮ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই পরিস্থিতি জন্যে দায়ী কে? এনিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে চলছে তরজা। পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল মুসলিম লীগ নওয়াজ দেশের এই সঙ্গীন পরিস্থিতির জন্যে দুষেছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টিকে।

অভিযোগ, ইমরান যে চারবছর ক্ষমতাসীন ছিলেন সেইসময়ে ২০ হাজার বিলিয়ন টাকা ঋণ নিয়ে পাকিস্তানকে ঋণ জর্জরিত করেছেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ জানিয়েছেন, পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া যুব সম্প্রদায়ের উন্নয়নেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
 

অর্থনৈতিক এই দুর্দশার ফল ভুগছে পাক সেনাও। পাক সেনা এখন সেনাবাহিনীর খরচখরচা কমানোর জন্যে একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে। টাকা সাশ্রয় করার জন্যে বাজেটে সেনার জন্যে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি তোলেনি পাক সেনা কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, ২০২২-২০২৩ আর্থিক বছরে প্রতিরক্ষা বাজেটে সেনা বাহিনীর খাতে বরাদ্দ কমিয়ে ১৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
গত আর্থিক বছরে এর পরিমাণ ছিল ২০ শতাংশ।

পাক সেনাবাহিনী অভ্যন্তরীণ খরচ কমাতে আরও কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। যেমন, বিদ্যুতের বিল, গ্যাস, জলের খরচ যথাসম্ভব কমানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পেট্রোল ও ডিজেলের খরচ কমাতে প্রতি শুক্রবার ড্রাই ডে পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি দূরবর্তী এলাকায় সেনা মহড়া না করে ক্যান্টনমেন্টের আশেপাশে সেনা মহড়া সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একগুচ্ছ ব্যবস্থা নেওয়া হলেও পরিস্থিতি সামলে পাকিস্তানের অর্থনীতি কবে ঘুরে দাঁড়াবে সেব্যাপারে এখনও নির্দিষ্টভাবে কিছু বলতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা। তবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ মনে করছেন, এই সঙ্কট তিনি কাটিয়ে উঠতে পারবেন।
 

পূর্বতন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ঋণে্র দায়ে জর্জরিত করার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। উল্টে ইমরানের দাবি, তাঁর আমলে পাকিস্তানের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলির ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলির উন্নয়ন খাতেই চার বছরে খরচ করা হয়েছিল ১৩১ বিলিয়ন টাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seventeen + 1 =