শ্রীলঙ্কায় যায়নি কোনও বাহিনী, স্পষ্ট জানিয়ে দিল ভারতীয় দূতাবাস

শ্রীলঙ্কায় যায়নি কোনও বাহিনী, স্পষ্ট জানিয়ে দিল ভারতীয় দূতাবাস

কলম্বো: সংকটের পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কার পাশেই রয়েছে দেশ। এই মুহূর্তে কার্যত গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতিতে বিক্ষোভের যে আগুন জ্বলছে দেশজুড়ে তা পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ের প্রতিবেশী হিসেবে সর্বদা পাশেই থাকবে ভারত। কিন্তু তাই বলে শ্রীলঙ্কার বিক্ষোভ রুখতে ভারতের তরফ থেকে কোনও সেনা পাঠানো হবে এমন সম্ভাবনার কথা কার্যত অবাস্তব। বুধবার শ্রীলঙ্কার ভারতীয় দূতাবাসের তরফ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হল, আপাতত ভারতের তরফ থেকে কোনও বাহিনী কলম্বোয় পাঠানোর সম্ভাবনাই নেই। কিন্তু শ্রীলঙ্কার গণতন্ত্র স্থায়িত্ব ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে পুরোপুরি পাশে রয়েছে দেশ।

গত শুক্রবার থেকেই দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে আরও জোরালো বিক্ষোভ মাথাচাড়া দেয় প্রায় দেউলিয়া দেশ শ্রীলঙ্কায়। দিন যত এগোতে থাকে পরিস্থিতি কার্যত ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। শেষে বিক্ষোভের চাপে পড়ে গত সোমবার শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। কিন্তু তারপরেও কমেনি বিদ্রোহ, বিক্ষোভ। সোমবার রাতেই আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে। অন্যদিকে সরকারপন্থী এবং সরকারবিরোধী দুই গোষ্ঠীর মধ্যে প্রবল সংঘর্ষের জেরে সোমবার রাতেই প্রাণ হারান কমপক্ষে ৫ জন, আহত হন দেড়শোর বেশি মানুষ। এই অচলাবস্থা, এই বিক্ষোভ জারি ছিল মঙ্গলবারও। এদিকে এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গুজব ছড়ায় যে রাজাপক্ষে এবং শ্রীলঙ্কার অন্যান্য রাজনীতিবিদরা প্রাণ বাঁচাতে দেশছাড়া হয়ে আশ্রয় নিয়েছেন ভারতে এবং কলম্বোর এই অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ভারতের তরফ থেকে পাঠানো হচ্ছে সেনাবাহিনী। কিন্তু ভারতীয় দূতাবাস এই দুই গুঞ্জনই উড়িয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাকচী বার্তা দিয়েছেন, ‘ভারত সবসময় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শ্রীলঙ্কার জনতার কল্যাণের পক্ষে থাকবে।’

এদিকে মঙ্গলবার রাতেও জারি ছিল ধ্বংসলীলা। এদিন রাতে প্রায় ৩৩ জন সাংসদ রাজনীতিবিদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। মঙ্গলবার রাতের মধ্যেই শ্রীলঙ্কায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয় ৮। এর মধ্যে রয়েছেন একজন সাংসদও। অন্যদিকে আহতর সংখ্যা ইতিমধ্যে তিনশো পার করেছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। এদিকে রণক্ষেত্রে পরিণত হওয়া শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি রুখতে মরিয়া প্রেসিডেন্ট গতাবায়া রাজাপক্ষে বুধবার সকালেই শাসক দল এবং বিরোধী দলের মধ্যে বৈঠক করবেন বলে জানা যায়। সেই সময়ই খবর রটে যে, শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি নাকি বিক্ষোভকারীদের দেখামাত্রই গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এই সমস্ত গুজবকে কেন্দ্র করে যাতে দেশের পরিস্থিতি আরও খারাপ না হয় তার জন্য সঙ্গে সঙ্গে শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতির অফিসের তরফ থেকে জানানো হয় এমন কোনো নির্দেশ রাষ্ট্রপতির তরফ থেকে দেওয়া হয়নি। এই সমস্ত গুজবে যেন কান না দেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − 18 =