প্যারিস: জাতপাতের রাজনীতি ভারতে নতুন নয়। সেই জাত-পাতের রাজনীতি দেখা দিয়েছে ফ্রান্সে। সামনেই ফ্রান্সের নির্বাচন। সেখানেই ফরাসি প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী মেরিন লা প্যঁ প্রচারে হিজাব নিষিদ্ধের পক্ষে সওয়াল করেছেন। প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর এই মনোভাব মোটেই ভালো চোখে দেখছেন না ফ্রান্সের ইসলাম ধর্মালম্বীরা। প্যঁ-কে সরাসরি প্রশ্ন করলেন ইসলাম ধর্মালম্বী এক বৃদ্ধা। স্পষ্ট ভাষায় তিনি জানতে চাইলেন, ‘হিজাব কেন আপনার কাছে বিতর্কিত পোশাক? কেন আপনি প্রেসিডেন্ট হলে হিজাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে চান?’
সামনেই ফ্রান্সে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এই নির্বাচনে বর্তমান ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁ প্রার্থী হচ্ছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মেরিন লা প্যঁ। আগের বারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও এই দুই প্রার্থী প্রতিন্দ্বিতা করেছিলেন। তবে সেবার ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁ জয় লাভ করে ফরাসি প্রেসিডেন্ট হন। আগের বারের মতো এবারেও প্যঁ ইসলাম বিরোধী প্রচার শুরু করেছেন। তিনি দেশবাসীকে প্রতিশ্রুতি দিতে শুরু করেছেন, প্রেসিডেন্ট হলে তিনি হিজাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করবেন।
আমেরিকার মতো ফ্রান্সেও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে প্রার্থীরা বিতর্ক সভায় অংশগ্রহণ করেন। তেমনি একটি বিতর্ক সভায় ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁ পাশাপাশি প্যঁ উপস্থিত ছিলেন। সেই সময় প্রবীণ ইসলাম ধর্মাবলম্বী মহিলা প্যঁকে প্রশ্ন করেন, ‘হিজাবে আপনার সমস্যা কোথায়? কেন আপনি হিজাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে চাইছেন? ’ প্রশ্নের উত্তরে প্যঁ বলেন, হিজাব জোর করে ইসলামধর্মালম্বী মহিলাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়। তাই তিনি নিষেধাজ্ঞা জারি করতে চাইছেন।
সেই সময় ওই মহিলা বলেন, ‘আমার ওপর তো কেউ চাপিয়ে দেননি। বয়স হওয়ার পর, ঠাকুমা হওয়ার পর নিজে থেকে এই পোশাক বেছে নিয়েছি। আপনি আমার কাছ থেকে এই পোশাক কেড়ে নিতে চাইছেন।’ পাশাপাশি ওই মহিলা বলেন, ‘আমার বাবা ফ্রান্সের সেনাবাহিনীতে ১৫ বছর কাজ করেছেন। কোনওদিন কল্পনা করতে পারিনি, দেশে এরকম দিন দেখতে হবে।’
যদিও হিজাব নিয়ে বিতর্কে ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁ অংশ গ্রহণ করেননি। তিনি বলেন, দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট হলেও হিজাবের আইনে কোনও পরিবর্তন হবে না। তবে তিনি স্কুল বা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধ করেছেন। তিনি মন্তব্য করেছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধর্মনিরপেক্ষ হওয়া প্রয়োজন। সেই কারণেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।