মামির শরীরে সাত মাসের ভ্রূণ! ‘মিসটেরিয়াস লেডি’র মুখাবয়ব তৈরি করলেন বিজ্ঞানীরা

মামির শরীরে সাত মাসের ভ্রূণ! ‘মিসটেরিয়াস লেডি’র মুখাবয়ব তৈরি করলেন বিজ্ঞানীরা

কলকাতা:  মিশরে ফের মমি রহস্য৷ এবার কেন্দ্রবিন্দুতে প্রাচীন মিশরের এক রহস্যময়ী৷ 

আরও পড়ুন- স্বামী আর প্রেমিককে নিয়ে এক ছাদের নীচে সহাবস্থান! ‘ত্রিকোণ প্রেমে’ সুখেই সংসার তাঁর

বিশ্বদরবারে মিশর পরিচিত মমির দেশ হিসাবেই৷ প্রাচীন মিশর নিয়ে কৌতুহলের অন্ত নেই ইতিহাসবিদ ও প্রত্নতত্ত্ববিদদের মধ্যে৷ বরাবরই মিশরের প্রতি তাঁদের দুর্বার আকর্ষণ৷ মমি নিয়ে চর্চা এখন বিজ্ঞানসম্মত৷ শুধু তাই নয়, কোন মমির মুখ কেমন হতে পারে, প্রযুক্তির হাত ধরে তাও বলে দেওয়া সম্ভব৷ সম্প্রতি এমন এক ঘটনা ঘটেছে, যা নিয়ে তোলপাড় গোটা বিশ্ব৷ ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা একটি মামির শরীরে জীবন্ত নারীর মতো লাবণ্যময় মুখ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। তবে এক্ষেত্রে রয়েছে অন্য এক চমক৷ বিশেষজ্ঞরা জানতে পেরেছেন, প্রাচীন মিশরের এই নারী মৃত্যুর সময়ে অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তাঁর শরীর থেকে সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ যথাসময়ে বের করে নেওয়া হলেও রয়ে গিয়েছিল গর্ভের ভ্রূণ৷ 

মমি

এর পর বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞরা জানতে পারেন, মিশরের প্রাচীন ওই রহস্যময়ী মৃত্যুর সময় ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। সন্তান গর্ভে নিয়েই মৃত্যু হয় তাঁর৷ 

প্রত্নবিজ্ঞানীরা এই রহস্যময়ী মমির শরীরে থাকা ভ্রূণ নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন। সেই পরীক্ষা করতে গিয়েই তাঁদের মনে যে প্রশ্নটা সবচেয়ে বেশি উঁকি দিয়েছে সেটা হল, কেন ওই রহস্যময়ীর শরীর থেকে সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ যথাসময়ে বের করে নেওয়া হলেও ভ্রূণটি রেখে দেওয়া হয়েছিল? এর সম্ভাব্য একটি উত্তরটি তাঁদর মাথায় এসেছে৷ মনে করা হচ্ছে, যাঁরা ওই তরুণীর নিথর দেহটি মমিতে রূপান্তরিত করার কাজটি করছিলেন, তাঁরা ভেবেছিলেন, ভ্রূণটি যতক্ষণ গর্ভে থাকবে ততক্ষণই শিশুটি তার মায়ের কাছ থাকবে। আসলে মমির ধারণা সে কথাই বলে৷ মমিকে এক অর্থে জীবন্তই মনে করা হয়। ফলে মৃত মায়ের সঙ্গে মৃত সন্তানকে রেখে দেওয়ার এই ভাবনাটা খুব একটা অবান্তর নয়৷

আজকাল প্রাচীন মিশরীয় মমিকে ‘রি-হিউমানাইজ’ করার একটা প্রবণতা প্রত্নতত্ত্ববিদদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। এর একমাত্র লক্ষ্য জীবদ্দশায় কেমন দেখতে ছিলেন তাঁরা? এর জন্য টু-ডি বা থ্রি-ডি প্রযুক্তিকৌশলের মদতে ফেসিয়াল রিকনস্ট্রাকশন করা হচ্ছে। যেমনটা করা হয়েছে এই রহস্যময়ীর অবয়ব তৈরির ক্ষেত্রে৷ মনে করা হচ্ছে প্রাচীন মিশরের ওই রহস্যময়ী যখন মারা গিয়েছিলেন তখন তাঁর বয়স ছিল ২০ থেকে ২৯ বছরের মধ্যে। এত অল্প বয়সে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কেন মারা গেলেন ওই তরুণী? বৈজ্ঞানিক গবেষণায় মিলেছে তারও এক চাঞ্চলকর তথ্য৷ বিজ্ঞনীদের অনুমান সম্ভবত ওই তরুণী ক্যানসারে ভুগছিলেন।  

এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ছানতাল মিলানি নামে এক ইটালিয়ান ফরেন্সিক অ্যানথ্রোপলজিস্ট বলেন, আমাদের হাড় ও করোটি থেকে মুখের আদল তকেমন হবে, সেই আন্দাজ সহজেই পাওয়া যায়। কারণ করোটি খুব স্পেসিফিক। হাড়ের চিহ্ন ধরেই প্রাচীন মিশরের এই রহস্যময়ীর মুখও নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। এখন আপনিও জানতে পারবেন কেমন দেখতে ছিল এই রহস্যময়ী৷