নিউইয়র্ক: আদালতে চলছে শুনানি। সকল পক্ষের কথাই মন দিয়ে শুনছেন বিচারপতি। অন্যদিকে আইনজীবীরা তাদের পেশাদারী দক্ষতায় একে অপরের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় মশগুল। হঠাৎই পিছন থেকে চিৎকার। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই অনেকে আদালতের বেঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে শুরু করলেন লাফানো। কেউবা আবার ভয়ে ছোটাছুটি শুরু করলেন আদালত চত্বরের মধ্যেই। ফলে বাধ্য হয়ে মাঝপথেই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে বাধ্য হলেন বিচারপতি। কিন্তু ব্যাপারটা কি? হঠাৎ কেন শুনানি চলাকালীন এমন হুড়োহুড়ি পড়ল আদালত চত্বরে? আসল কারণটি যখন সকলের সামনে এল তখন রীতিমতো চক্ষুচড়কগাছ অবস্থা বিচারপতি থেকে আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মী সকলেরই। জানা যাচ্ছে, নিউইয়র্কের আদালতে শুনানি চলাকালে হঠাৎই আদালতকক্ষে কেউ ছেড়ে দেন একগুচ্ছ আরশোলা। আর সেই আরশোলা গা, পা বেয়ে উঠতে শুরু করতেই শুরু হয় হুড়োহুড়ি, লাফালাফি। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে আদালত চত্বরে উপস্থিত সকলের মধ্যে। ফলে বন্ধ হয় শুনানির কাজও। সম্প্রতি এমন ঘটনাই ঘটেছে নিউ ইয়র্কের ক্যাপিটালের অ্যালবানি কোর্টে।
জানা যাচ্ছে, মঙ্গলবার নিউইয়র্কের এই আদালতে একটি মামলার শুনানি চলছিল। সেই শুনানি চলাকালে আচমকাই দেখা যায় আদালতের কক্ষে উপস্থিত এক ব্যক্তি যিনি আসামিপক্ষের হয় উপস্থিত ছিলেন তিনি বিচার প্রক্রিয়াটি রেকর্ডিং করছেন। যেহেতু বিনা অনুমতিতে শুনানির রেকর্ডিং করা যায় না তাই সঙ্গে সঙ্গে তাকে রেকর্ডিং করতে বাধা দেন আদালতে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিকরা। এর জেরে পুলিশদের সঙ্গে বচসা শুরু হয় ওই ব্যক্তির এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি আদালতকক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান। পরে তিনি আদালতে ফেরতও এসেছিলেন তিনি। কিন্তু তার হাতে ছিল একটি প্লাস্টিকের বাক্স। এই ঘটনা ঘটার কিছুক্ষণ পরেই দেখা যায় আদালতের মেঝেতে শয়ে শয়ে আরশোলা ঘুরে বেড়াচ্ছে। আদালতে উপস্থিত লোকজনের হাত, পা বেয়ে আসলে উঠতে শুরু করলেই শুরু হয় হুড়োহুড়ি, চিৎকার-চেঁচামেচি। মুহুর্তের মধ্যেই আদালত কক্ষে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাধ্য হয়েই শুনানির কাজ বন্ধ রেখে আদালত কক্ষ থেকে সকলকে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর আরশোলা তাড়ানোর জন্য সারাদিন আদালত কক্ষ বন্ধ করে দেন বিচারপতি।
নিউইয়র্ক পুলিশের সন্দেহ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শুনানিতে বাধা সৃষ্টি করার কারণেই আদালতকক্ষে কেউ এত আরশোলা ছেড়ে দিয়েছিল। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় ৩৪ বছর বয়সী এক মহিলাকে আটক করে পুলিশ। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোনো রকম তথ্যপ্রমাণ না থাকার কারণে পরে তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় তারা। তবে ওই মহিলা মুখ খুলতে রাজি না হলেও এবং তার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ না পাওয়া গেলেও ইতিমধ্যেই আরশোলা কাণ্ড নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে নিউইয়র্ক পুলিশ।