করোনায় ‘প্রথম’ মৃত্যু কিমের দেশে, আক্রান্ত ৬ লক্ষ

করোনায় ‘প্রথম’ মৃত্যু কিমের দেশে, আক্রান্ত ৬ লক্ষ

বহু চেষ্টার পরেও রোখা যায়নি করোনা সংক্রমণ। প্রাণঘাতী করোনা প্রায় আড়াই বছর ধরে বিশ্বব্যাপী মহামারী ছড়ানোর পর শেষমেশ থাবা বসিয়েছে কিমের দেশে গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবারই সর্বপ্রথম সামনে এসেছিল সেই খবর। দেশের সরকারি গণমাধ্যমের তরফ থেকে সম্প্রতি এই প্রসঙ্গে একটি খবর প্রকাশ করে জানানো হয় দিন কয়েক আগে কয়েক জনের মধ্যে করোনার উপসর্গ লক্ষ্য করা হয়। তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। সেই পরীক্ষার রিপোর্ট সামনে এলেই জানা গিয়েছে যে শেষমেশ উত্তর কোরিয়াতে হানা দিয়েছে করোনার নব প্রজাতি ওমিক্রন। উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করছে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ মহল। এর মধ্যেই করোনার কবলে প্রথম মৃত্যুর কথা স্বীকার করে নেওয়া হল উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে। এই ঘটনা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম কেসিএনএ জানিয়েছে গত ২৪ ঘন্টায় জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশে মোট ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের শরীরে করোনার ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের সন্ধান মিলেছে।

উল্লেখ্য, গোটা বিশ্বে ত্রাস সৃষ্টি করার প্রায় আড়াই বছর পর নাকি এই প্রথম উত্তর কোরিয়ায় হানা দিল মারণ ভাইরাস করোনা। ২০১৯ সালে চীনের উহান প্রদেশে যে ভাইরাসের জন্ম এবং চিন থেকে ধীরে ধীরে ২০২০ এবং ২১ সালে যখন গোটা বিশ্বে এই প্রাণঘাতী মহামারী লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন কেড়েছে, তখনও নাকি উত্তর কোরিয়া ছিল করোনা মুক্ত, এই দেশে হানার কোনও কথাই প্রকাশ্যে আসেনি এই আড়াই বছরে। আপাতদৃষ্টিতে এই দেশ যে এখনও করোনামুক্ত সেটাই আন্তর্জাতিক স্তরে বারবার প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে কিমের সরকার। কিন্তু আর হয়তো শেষ রক্ষা হল না। সম্প্রতি জানা যায় উত্তর কোরিয়ায় হানা দিয়েছে করোনার নতুন প্রজাতি ওমিক্রন। বৃহস্পতিবার এই প্রসঙ্গে একটি বিবৃতি দিয়েছে সিওল, যেখানে বলা হয়েছে সম্প্রতি এই দেশেও থাবা বসিয়েছে করোনা। তবে করোনা পরিস্থিতিতে এই মুহূর্তে দেশের ঠিক কি অবস্থা কিংবা এখনও পর্যন্ত কতজন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন সে প্রসঙ্গে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি উত্তর কোরিয়া সরকারের পক্ষ থেকে। তবে শুক্রবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ‘কেসিএনএ’ জানিয়েছে, ‘সারা দেশে সাড়ে তিন লক্ষের বেশি মানুষের শরীরে করোনার উপসর্গ লক্ষ্য করা গিয়েছে। জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন পৌনে দুই লক্ষ। তাদের আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। জ্বরের বলি হয়েছেন ছয়জন। তাদের মধ্যে একজনের ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে গোটা দেশে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠছে।’

ওই দেশের সরকারি প্রচারমাধ্যম এই ঘটনা প্রসঙ্গে জানিয়েছে গত রবিবার বেশ কয়েকজনের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। সেই পরীক্ষার রিপোর্ট বলছে যে আক্রান্তদের শরীর থেকে  ওমিক্রন BA. 2-এর সংক্রমনের সন্ধান মিলেছে। তবে করোনা পরিস্থিতিকে প্রথম থেকেই নিয়ন্ত্রণ করতে তৎপর উত্তর কোরিয়া। আর তাই রাতারাতি এই দেশজুড়ে জারি করা হয়েছে লকডাউন। এর সঙ্গেই সীমান্ত সিল করার পাশাপাশি কিম পলিটব্যুরোর বৈঠকও ডেকেছেন বলে খবর। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, কিম পলিটব্যুরোর বৈঠকে বলেন যে কোনও মূল্যে এই সংক্রমণ রোধ করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *