দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে পরিকাঠামো উন্নয়নের নামে চিন পেতেছে ঋণের ফাঁদ!

দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে পরিকাঠামো উন্নয়নের নামে চিন পেতেছে ঋণের ফাঁদ!

 

বেজিং: চিনের কাছে ফের হাত পেতেছে শ্রীলঙ্কা। চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এখনও ওই ঋণের আবেদন মঞ্জুর করেননি। এদিকে শ্রীলঙ্কার দরকার নগদ টাকা। সেক্ষেত্রে মানুষের রোষ খানিক প্রশমিত করা যেত। চিনের কাছে শ্রীলঙ্কা কি এখন পরিত্যক্ত দেশ? প্রেসিডেন্ট শি জিনপিন ঋণের আবেদন বেশ কিছুদিন ধরে ফেলে রাখার জেরে এই জল্পনা চলছে। কেবল শ্রীলঙ্কাই নয়, চিনা ঋণে জর্জরিত দক্ষিণ এশিয়ার একাধিক দেশ। শ্রীলঙ্কার খোদ প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীকেই গা ঢাকা দিতে হয়েছে দেশের মানুষকে চিনা ঋণের ফাঁদে ফেলায় জনরোষের মুখে পড়ে। পর্যবেক্ষকদের একাংশের অভিমত, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন না করে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন অর্থহীন।

দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ চিনার ঋণের ফাঁদে পড়ে নাকানিচোবানি খাচ্ছে। পরিকাঠামো উন্নয়ন খাতে চিনা ঋণের ফাঁদে পড়ে নাকানিচোবানি খেতে হচ্ছে শ্রীলঙ্কাকে। রাজাপক্ষ জমানায় পরিকাঠামো উন্নয়ন খাতে ভবিষ্যত কী হতে পারে তা বিবেচনা না করেই চিনের কাছ থেকে দেদার টাকা ঋণ নেওয়ায় ডুবতে বসেছে শ্রীলঙ্কা। নাগরিকদের জীবন শোচনীয় অবস্থায় গিয়ে পড়েছে।চিন ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার অন্য যে দেশগুলির ঘাড়ে সেই দেশগুলির মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান, নেপাল, মালদ্বীপের মতো একাধিক দেশ। এই দেশগুলিকে চিন বিপুল পরিমাণ টাকা ঋণ দিয়েছে পরিকাঠামো উন্নয়ন বাবদ ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিসিয়েটিভ’ খাতে। চড়া সুদে ঋণ নেওয়ার জেরে ঋণভারে জর্জরিত দেশের কী করুণ পরিণতি হতে পারে এর সাম্প্রতিক একটি নমুনা শ্রীলঙ্কার বর্তমান পরিস্থিতি। আদতে পরিস্থিতি মানুষের সহ্যের সীমা ছাড়িয়েছে।

চিন প্রতিবেশী দেশগুলিকে ঋণগ্রস্ত করিয়ে সেইসব দেশ ঋণ শোধ করতে না পারলে সেখানকার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর কৌশল চিনের কূটনীতি। যেমন, ইতিমধ্যে রাজাপক্ষ সরকার চিনের কাছে ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে হাম্বানটোটা বন্দরটি হাতছাড়া করেছে। শ্রীলঙ্কার রাজাপক্ষ পরিবার চিনের কাছ থেকে প্রচুর টাকা ঋণ নিয়ে বিপন্ন মানুষ পথে নেমে গণবিদ্রোহে সামিল। এই পরিস্থিতিতেও ফের চিনের কাছে হাত পেতেছে শাসকপক্ষ। তবে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ঋণবাবদ ফের এক বিলিয়ন ডলার এখনও অনুমোদন করেননি। শ্রীলঙ্কার বাজেট ঘাটতি সেদেশের জিডিপির চেয়ে ১৩ শতাংশ কম। বর্তমানে রাজকোষে বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণ তলানিতে। অথচ ২০১৯ সালে রাজকোষে ছিল ৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা।

নাগরিকদের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির উন্নয়নে অমনোযোগী থেকে পরিকাঠামো উন্নয়নের নামে বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যয় করা এবং দেশের মানুষের খাড়ে ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেওয়ার রাজনীতি নিয়ে বিতর্ক চলছেই। তবে এনিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ চিনের বশংবদ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের শাসকরা। ধার করে ঘি খাওয়ার পরিণামে শ্রীলঙ্কার সর্বশেষ পরিস্থিতি থেকে ওঁরা শিক্ষা নেবেন কি? শি জিনপিং শ্রীলঙ্কাকে এখনই ঋণ দেবেন কিনা তা নিয়ে এখন জোর জল্পনা। যদিও এব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানায়নি চিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 5 =