কলকাতার পরে এবার লন্ডন! ফের খোঁজ মিলল পোলিও ভাইরাসের

কলকাতার পরে এবার লন্ডন! ফের খোঁজ মিলল পোলিও ভাইরাসের

লন্ডন: দিন কয়েক আগেই কলকাতায় পোলিও ভাইরাসের খোঁজ মেলায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল গোটা শহর জুড়ে। এবার সেই একই ভাইরাসের খোঁজ মিলল লন্ডনের নর্দমায়। ফলে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই মাথাচাড়া দিয়েছে উদ্বেগ। গত সপ্তাহে কলকাতায় এই মারণ ভাইরাসের জীবাণু কলকাতার নিকটবর্তী মেটিয়াবুরুজের নর্দমা থেকে পাওয়া গিয়েছিল। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক ছড়ায় গোটা এলাকায়। এমতাবস্থায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এই মারণ ভাইরাস নিয়ে ফের সতর্কতামূলক প্রচার চালাতে শুরু করে কলকাতা পুরসভা। সেই উদ্বেগ কাটতে না কাটতেই এবার লন্ডনের নিকাশি নালা তথা নর্দমা থেকে একই ধরনের পোলিও ভাইরাসের খোঁজ মিলল। ব্রিটিশ স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফ থেকেও এই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে কোথা থেকে এই ভাইরাস এসেছে এবং তা ছড়িয়ে পড়েছে কিনা সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে লন্ডন স্বাস্থ্য দপ্তর।

এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এখনো অবধি ব্রিটেনে কোন পোলিও আক্রান্তের খোঁজ মেলেনি। প্রায় দুই দশক ধরে এই ভাইরাসে আক্রান্ত তো দূর অস্ত এই ভাইরাসই সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই ব্রিটেনের রাজধানী লন্ডন থেকে টাইপ টু পোলিও ভাইরাসের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্তের কোন খোঁজ মেলেনি। কিন্তু যেহেতু এই ধরনের ভাইরাস যে কোনো শিশুর জন্য ভয়ঙ্কর তাই এই জীবাণুর সন্ধান মেলার খবর পাওয়া মাত্রই ফের নতুন করে সর্তকতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

উল্লেখ্য আশির দশকে অন্যতম মারণ ভাইরাস হিসেবে পরিচিত ছিল পোলিও। সাধারণত পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যেই এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব পরিলক্ষিত হত। এই জীবাণু এক ব্যক্তির দেহ থেকে অন্য ব্যক্তির দেহে সংক্রমিত করতে পারে এবং আক্রান্ত ব্যক্তির স্নায়ুতন্ত্রের প্রবেশ করে এই ভাইরাস স্নায়ুকোষকে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করে। ১৯৮৮ সালে বিশ্বের ১২৫টি দেশে পোলিওমাইলিটিজ যা চলতি কথায় পোলিও নামে পরিচিত তা মহামারীর আকার ধারণ করেছিল। সেই সময় প্রায় সাড়ে তিন লাখেরও বেশি শিশু এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। এরপর এই ভাইরাস নিরাময়ের শুরু হয় টিকাকরণ। সঙ্গে সতর্কতামূলক প্রচারের প্রভাবেই পোলিও আক্রান্তের সংখ্যা ৯৯ শতাংশ কমে গিয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি এই ভাইরাসের জীবাণুর হদিশ বিভিন্ন জায়গা থেকে পাওয়া যাওয়ায় ফের নড়েচড়ে বসেছেন চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞ মহল। দিন কয়েক আগেই কলকাতা পুরসভার ১৫ নম্বর বোরোর অধীনে মেটিয়াবুরুজ এলাকায় একটি নর্দমার জল থেকে এই ভাইরাসের সন্ধান মিলেছিল। তবে সেটা ছিল পোলিও টাইপ ওয়ান ভাইরাস। কিন্তু সম্প্রতি লন্ডনে এক নর্দমা থেকে যে ভাইরাসের সন্ধান মিলেছে তা হলো টাইপ টু ভাইরাস। তবে টাইপ ওয়ান হোক কিংবা টাইপ টু যেকোনো পোলিওর ভাইরাসই মানুষের শরীরে অত্যন্ত ক্ষতিকারক। মূলত সেই কারণেই নতুন করে এই ভাইরাসের সন্ধান মেলায় রীতিমতো নড়েচড়ে বসেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *