গির্জায় প্রার্থনা করতে প্রায় ২৩ বছর আগে দেখা। এতগুলো বছরে বদলেছে অনেক কিছু। যেমন সময় বদলেছে, তেমনই বদলেছে আশেপাশের পরিবেশ, পরিস্থিতি। কিন্তু আশেপাশের গোটা দুনিয়া বদলে গেলেও দুজনের মধ্যে প্রেম রয়ে গেছে অপরিবর্তিতই। আর তাই ২৩ বছর আগে যে গির্জাতে এক ঝলক দেখেই একে অপরের প্রেমে পড়েছিলেন, সেই গির্জাতেই গত ১৯ মে একে অপরের সঙ্গে বিবাহ সূত্রে বাঁধা পড়লেন 95 বছর জুলিয়ান এবং ৮৫ বছর বয়সী ভ্যালেরি। সারা জীবন ধরে অপেক্ষা করেছেন মনের মানুষের। সেই মনের মানুষকে জীবনের একবারে শেষ লগ্নে পেয়েই শুরু হল নতুন পথ চলা।
পাত্রের বয়স ৯৫ বছর। নাম জুলিয়ান। এই জুলিয়ানের বয়স যখন সত্তরের দোরগোড়ায় তখনই তিনি আজ থেকে প্রায় ২৩ বছর আগে গির্জায় প্রার্থনা করতে এসে প্রথম রেখেছিলেন ভ্যালেরিকে। প্রথম সাক্ষাতেই ভ্যালেরিকে একেবারে কাছের মানুষ বলে মনে হয়েছিল। ভ্যালেরিকে দেখামাত্রই জুলিয়ান বুঝেছিলেন সুদীর্ঘকাল ধরে তিনি যার জন্য অপেক্ষা করে বসে আছেন ভ্যালেরিই সেই মানুষ। কিন্তু তারপরেও নানা কারণে এক হয়নি দুজনের জীবন। শেষে প্রায় ২৩ বছর পরে পরিবারের সদস্যদের সাক্ষী রেখেই নতুন জীবনে পা রাখলেন এই দুই চির তরুণ হৃদয়। জানা যাচ্ছে, ৯৫ বছর বয়সী জুলিয়ানের এটাই প্রথম বিবাহ। তিনি সারাজীবন ধরে অপেক্ষা করেছেন সঠিক মানুষটির জন্য। এমনকি ভ্যালেরির সাথে দেখা হওয়ার পরেও আরও অনেক মহিলার আগমন হয়েছিল জুলিয়ানের জীবনে। কিন্তু তাদের কাউকেই মনে ধরেনি তাঁর। আর তাই সাক্ষাতের ২৩ বছর পর শেষমেষ ভ্যালেরিকে বিবাহ করার সিদ্ধান্ত নেন জুলিয়ান।
জুলিয়ানের কীর্তি দেখে রীতিমতো বিস্মিত ভ্যালেরি। তাঁর কথায়, ‘সত্যি বলতে কি একবারের জন্য বিশ্বাস করতে পারছি না। ওর জীবনে বহু মেয়ে এসেছে। কিন্তু তাদের সবাইকে ছেড়ে ও যে আমাকে ভালোবেসেছে এবং আমাকে ছাড়া আর কাউকে নিজের জীবনসঙ্গী হিসাবে দেখতে চাননি তার জন্য আমি সারা জীবন ওর কাছে কৃতজ্ঞ থাকব।’ অন্যদিকে জুলিয়ানের কথায়, ‘ভ্যালেরি অত্যন্ত মানবদরদী। আর সেটার জন্যই ওকে এত ভালোবাসা।’ এই যুগলের প্রেম কাহিনী রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছে বিশ্ববাসীকে। চাইলে যে কোন সম্পর্ককে যে এত সুন্দর এবং এত মজবুতভাবে টিকিয়ে রাখা যায় তাঁরই এক অভাবনীয় বার্তা দিলেন জুলিয়ান এবং ভ্যালেরি।