৮৭ বছরে নতুন জীবনে পা, লেখাপড়া শুরু করলেন বৃদ্ধা! স্বপ্ন, অন্তত এক জনকে শিক্ষিত করে তোলা

৮৭ বছরে নতুন জীবনে পা, লেখাপড়া শুরু করলেন বৃদ্ধা! স্বপ্ন, অন্তত এক জনকে শিক্ষিত করে তোলা

কায়রো: ইচ্ছেটাই সব। বয়স তো শুধু একটা সংখ্যা মাত্র৷ মনে অদম্য জেদ আর ইচ্ছাশক্তি থাকলে, যে কোনও বয়সেই যে নতুন করে শুরু করা যায়, তা আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন ৮৭ বছরের এই বৃদ্ধা৷ তিনি বুঝিয়ে দিলেন, লেখাপড়া শেখার কোনও বয়স হয় না৷ 

আরও পড়ুন- চিনের গবেষণাগার থেকেই করোনার ঢেউ! দাবি এই গোয়েন্দা সংস্থার

মিশরের বাসিন্দা ওই বৃদ্ধার নাম জুবাইদা আবদেল৷ আগাগোড়াই পড়াশোনা প্রতি তাঁর বড্ড ঝোঁক৷ কিন্তু, পারিবারের চাপে পড়ে নিজের জন্য লেখাপড়ার সময় ও সুযোগ কোনওটাই হয়ে ওঠেনি তাঁর। তবে হাল ছাড়েননি৷ ছোটবেলার সেই স্বপ্ন পূরণ করলেন নব্বইয়ের দোড়গোড়ায়৷ 

৮৭ বছর বয়সে পৌঁছে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন জুবাইদা আবদেল। সাক্ষরতার শংসাপত্র পাওয়াই এখন তাঁর জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। নিজে শিক্ষার আলোয় সিক্ত হয়ে জীবনে অন্তত এক জনকে শিক্ষিত করে তুলতে পারাটাই তাঁর জীবনের সার্থকতা বলে জানিয়েছেন জুবাইজা। সে দেশের সরকারের তরফে মিশরের বাসিন্দাদের জন্য একটি সাক্ষরতা অভিযান চালানো হয়েছিল। সেই অভিযানের হাত ধরেই বৃদ্ধ বয়সে নতুন করে শিক্ষিত হওয়ার সুযোগ পান জুবাইদা৷  শিক্ষার আলো দেখতে পান তাঁর মতো আরও অনেকেই।

আট সন্তানের মা জুবাইদা ইতিমধ্যেই এক ছেলে ও এক মেয়েকে হারিয়েছেন৷ ১৪ জন নাতিপুতি নিয়ে এখন ভরা সংসার তাঁর। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ ছিল তাঁর৷ লেখাপড়া শিখতে চাইতেন মনে প্রাণে। কিন্তু তাঁর বাবা ছিলেন রক্ষণশীল৷ তাঁর সেই মনোভাবই জুবেইদার পড়াশোনা শেখার পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়ায়৷ ফলে পড়াশোনার সুযোগ কখনই পাননি তিনি। বাবার মৃত্যুর পর নিজে উদ্যোগ নিয়েই বোনদের জোর করে পড়াশোনা শেখান জুবাইদা। কিন্তু, নিজের কথা আর ভাবা হয়ে ওঠেনি৷ এরপর ১৮ বছর বয়সে বিয়ে হয়ে যায় তাঁর। বিয়ের পর সন্তানদেরও জোর করে স্কুলে ভর্তি করান। ছেলেমেয়েরা যাতে স্কুল থেকে পালাতে না পারে, পড়াশোনায় ফাঁকি দিতে না পারে, তার জন্য স্কুলের ঠিক বাইরেই জিনিসপত্র নিয়ে বসতেন তিনি। সেখানে বলেই ছেলেমেয়েদের অনুকরণ করে লেখাপড়া শেখার চেষ্টা চালিয়ে যেতেন জুবাইদা।

জীবনের শেষ লগ্নে পৌঁছে নতুন করে বাঁচার রসদ খুঁজে পেলেন এই অশিতীপর ৷ সরকারের উদ্যোগে লেখাপড়া করার সুযোগ পেয়ে দারুন খুশি তিনি। ২০২২ সালের জুলাই মাসে এই উদ্যোগ শুরু করে মিশর সরকার। গত ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত দেশব্যাপী প্রায় ৯০০০ জন এই প্রকল্পে অংশ নিয়েছেন। আর তার মধ্যে অন্যতম হলেন এই বৃদ্ধা৷